Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Sovon Chatterjee

বৈশাখীর গোসা ভাঙল না, এলেন না শোভনও, চরম বিব্রত বিজেপি

তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেও, বিজেপির এই মিছিলকে গেরুয়া শিবিরে শোভন-বৈশাখীর ‘গ্র্যান্ড লঞ্চ’ হিসেবেই ধরা হচ্ছিল।

শোভন-বৈশাখীর অনুপস্থিতিতে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির।

শোভন-বৈশাখীর অনুপস্থিতিতে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:২৬
Share: Save:

দিনভর নাটক শেষেও বিজেপি-র মিছিলে এলেন না শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সপ্তাহ দুয়েক আগেই রাজ্যে ঘুরে গিয়েছেন অমিত শাহ। ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু খিদিরপুরে বিজেপি-র পূর্ব নির্ধারিত মিছিলে ঠিক তার উল্টো ছবিটাই ধরা পড়ল। যে মিছিলকে গেরুয়া শিবিরে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গ্র্যান্ড’ লঞ্চ হিসেবে ধরা হচ্ছিল, ‘মান-অভিমান দেখাতে গিয়ে’ নিজেরাই তাঁরা তা ভেস্তে দিলেন। তাতে শোভন-বৈশাখীর কতটা ক্ষতি হল, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, নির্বাচনের আগে এই মিছিল বিজেপি-র বিড়ম্বনা বাড়াল।

শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনসমর্থন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সোমবার রাস্তায় নামলেও, দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার বিজেপির এই মিছিলের আসল উদ্দেশ্য ছিল গেরুয়া শিবিরে শোভন-বৈশাখীকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া। কারণ দেড় বছর আগে দলে যোগ দিলেও, এখনও পর্যন্ত বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁদের। কলকাতা জোনে শোভনকে পর্যবেক্ষক এবং বৈশাখীকে সহ-আহ্বায়ক নিযুক্ত করে গতমাসে সেই গেরো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। আশা ছিল, এর পর হয়ত এই দু’জনকে নিয়ে আর কোনও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে না তাঁদের।

কিন্তু মিছিল ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, সেইসময় রবিবার রাতেই তাল কাটে। ভুবনেশ্বর থেকে ফিরেই মিছিলে যোগ দেওয়া নিয়ে বেঁকে বসেন বৈশাখী। কলকাতা জোনের কমিটিতে তাঁর পাশাপাশি শঙ্কুদেব পণ্ডাকে কেন সহ-আহ্বায়কের পদ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই তাঁদের গোলপার্কের বাড়িতে ছুটে যান দেবজিৎ সরকার, রাকেশ সিংহরা। যান শঙ্কুদেব নিজেও। কিন্তু বৈশাখী সাফ জানিয়ে দেন, শঙ্কুদেব থাকলে মিছিলে অংশ নেবেন না তিনি। বৈশাখী বেঁকে বসায় শোভনের মিছিলে যোগ দেওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: দেশ-বিদেশের ডাক্তারদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক, আপাতত আর স্টেন্ট নয়, দু’তিন দিনে ছুটি সৌরভের​

আরও পড়ুন: বেনামি সম্পত্তি মামলায় রবার্ট বঢরার বাড়িতে আয়কর কর্তারা​

সোমবার সকাল থেকে হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ও সেখানে এসে উপস্থিত হন। সেখানে পালা করে ফোনে শোভন, বৈশাখীর মান ভাঙানোর প্রচেষ্টা শুরু হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। জানা গিয়েছে, শেষমেশ হস্তক্ষেপ করতে হয় এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকেও।

কিন্তু শত চেষ্টা করেও তিন জনের কারও মান ভাঙানো যায়নি। এ দিকে বাইরে তখন আবেগে ভাসছেন বিজেপি সমর্থকরা। তাই শেষমেশ শোভন, বৈশাখী এবং শঙ্কুদেবকে ছাড়াই সাড়ে ৩টেয় মিছিল বার হয়। তাতে যোগ দেন মুকুল, এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং অন্যান্যরা। প্রথমে মিছিলে না থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও, পরে মিছিলে যোগ দেন দেবজিৎও। শোভন-বৈশাখীর মিছিলে না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করলে কৈলাস বলেন, ‘‘মিছিলে কে এল, কে না এল, তা বড় কথা নয়। এটা বিজেপির মিছিল। আমার আমন্ত্রণ রয়েছে, তাই যাচ্ছি।’’ তবে ভোটের আগে রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে এই সামঞ্জস্যের অভাবে বিজেপির অস্বস্তি বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy