—প্রতীকী ছবি।
গাঁজার উৎস এবং পথ কি তা হলে বদলে যাচ্ছে?
গত দু’মাসে ছ’দফায় গাঁজা পাকড়াও করেছে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। তাদের দাবি অনুযায়ী, সেই গাঁজা মূলত এসেছে ত্রিপুরা থেকে। এর ফলে পুলিশের ধারণা, মণিপুরের গাঁজার দিন গিয়েছে। বদলে বাড়ছে ত্রিপুরার গাঁজার কদর।
এ কথা অবশ্য অস্বীকার করছে না ত্রিপুরার পুলিশও। ত্রিপুরা পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি রাজীব সিংহ জানান, গত ন’মাসে সে রাজ্য থেকে মোট ৬০ হাজার কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তার পরও যে গাঁজা কোনও না কোনও ভাবে অন্যত্র চলে যাচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, পাচারের সময়ে প্রতিবার বিভিন্ন পন্থা নিচ্ছে পাচারকারীরা।
জলপাইগুড়ি পুলিশের দাবি, শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, ত্রিপুরার গাঁজা এখন ছড়িয়ে পড়ছে দেশে-বিদেশে। তাদের বক্তব্য, এই গাঁজার দামও বেশ চড়া। এক কেজি গাঁজা ১০-১৫ হাজার টাকা। গত কয়েক মাসে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর, গোশালা মোড়ে গাড়ি আটকিয়ে সব মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের নথি অনুযায়ী সেই গাঁজার পুরোটাই এসেছে ত্রিপুরা থেকে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে উত্তর-পূর্ব ভারতে গাঁজা ‘ব্যবসা’য় বড় ধরনের বদল এসেছে। মণিপুর থেকে ভরকেন্দ্র সরে গিয়েছে ত্রিপুরায়।
কিছু দিন আগে পর্যন্ত মণিপুরের গাঁজা ছিল প্রথম সারিতে। পুলিশ এবং নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো সূত্রের খবর, সে রাজ্যে গাঁজা চাষ রুখতে পুলিশ থেকে সামরিক বাহিনী, বিএসএফ এবং একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা এখন যথেষ্ট সক্রিয়। তাই গাঁজা চাষ সরে গিয়েছে ত্রিপুরার উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকায়।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “ত্রিপুরা-অসমের মধ্যে একটি চক্র বেশ সক্রিয় হয়েছে। সম্প্রতি যত গাঁজা উদ্ধার হচ্ছে তার বেশির ভাগটাই ত্রিপুরা থেকে অসম হয়ে আসছে বলে জানা যাচ্ছে।”
শনিবারই জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর মোড় থেকে প্রায় ৩০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার ত্রিপুরার এক বাসিন্দা। তাঁকে জেরা করে ত্রিপুরা থেকে গাঁজা পাচারের নানা তথ্য হাতে এসেছে বলে পুলিশের দাবি। ত্রিপুরার পাহাড়ি এলাকা থেকে ড্রাম ভর্তি করে গাঁজা আনা হয় সমতলে। প্লাস্টিক প্যাকেটে ভরে ছোট গাড়িতে চাপিয়ে সেই গাঁজা যায় অসমে। পরে তা ট্রাক, এসইউভি-তে চাপিয়ে জাতীয় সড়ক দিয়ে রওনা করানো হয় বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি বা কলকাতার দিকে। এ কথা ত্রিপুরা পুলিশও মেনে নিয়েছে। ট্রাকে তেল ট্যাঙ্কের পাশে নকল কুঠুরি বানিয়েও গাঁজা পাচার হয়।
(ত্রিপুরা থেকে তথ্য সহায়তায় বাপি রায়চৌধুরী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy