ইডির প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজসাক্ষী হতে চান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। সম্প্রতি এই মামলায় রাজসাক্ষী হতে চেয়ে ইডির বিশেষ আদালতে আবেদন করেন তিনি। ইতিমধ্যেই সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় অভিযোগ থেকে তাঁকে মুক্ত করার আর্জি জানান কল্যাণময়। ওই সূত্রের দাবি, গোপন জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়েও সম্মতি জানান তিনি।
নিয়োগ মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কী ভাবে, কোন সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক তছরুপ হয়েছে, ওই চার্জশিটে তা উল্লেখ করা হয়। কল্যাণময় এই চার্জশিটে অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত। তাঁকে একাধিক বার জেরা করে ইডি জানতে পারে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকজনকে নগদে টাকা দিতেন পার্থ। সেই টাকাই আবার ফিরে আসত তাঁর স্ত্রীর নামে তৈরি ট্রাস্টে। এ ভাবে ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ দুর্নীতির অন্যতম ‘আঁতুড়ঘর’ হয়ে উঠেছিল। নিয়োগ মামলার চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছে ইডি। তারা জানায়, পার্থের জামাই কল্যাণময়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। নিয়োগ মামলায় পার্থদের ট্রাস্টের ‘ডোনেশন রহস্য’ও ইডির কাছে ফাঁস করেন পার্থের জামাই।
প্রাথমিক ভাবে বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছিল পাটুলি এলাকায় একটি পশুচিকিৎসালয় তৈরির উদ্দেশ্যে। কল্যাণময় ওই ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন। তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছিলেন, এক বার ওই ট্রাস্টের জন্য ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯১০ টাকা ‘ডোনেশন’ উঠেছিল। একাধিক ব্যক্তি চেকের মাধ্যমে সেই টাকা দিয়েছিলেন। আসলে তার আগে পার্থের কাছ থেকে নগদে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই টাকাই ‘ডোনেশন’ দিয়েছেন। তা দিয়ে ১৫ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল ২০১৯ সালে।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে রাশি রাশি নগদ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। ওই টাকা কী ভাবে কালো থেকে সাদা করা হত, তা তুলে ধরতে পার্থের জামাই কল্যাণময়ের বয়ানকেই আদালতে হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।