ফাইল চিত্র।
কথায় বলে নামে কি যায় আসে! তবে প্রস্তাবিত নতুন সাত জেলার নাম নিয়েই এখন নানা মত। বিশেষ করে নবাব সিরাজদৌল্লা আর রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জেলায় আবেগ এবং ইতিহাস উস্কে সমাজমাধ্যমে চলছে আলোচনা, আবার কিছু ক্ষেত্রে পথে নেমে হচ্ছে প্রতিবাদও।
কৃষ্ণচন্দ্রের জেলায় নতুন নামের সঙ্গে ‘নদিয়া’ শব্দটি রাখার দাবিতে মঙ্গলবার শান্তিপুরে প্রতিবাদ মিছিল হয়। অরাজনৈতিক মিছিলে বিভিন্ন বিগ্রহ বাড়ির প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিশিষ্টরা পা মেলান। এঁদের কেউ কেউ জেলা ভাগেরও বিপক্ষে। বাকিদের মত, জেলা ভাঙলেও ‘নদিয়া’ নামটি রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে নদিয়া উত্তর এবং নদিয়া দক্ষিণ নামের প্রস্তাব রয়েছে।
মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে জঙ্গিপুর ও কান্দির নামের সঙ্গে পুরনো শব্দটি জোড়ার দাবি উঠেছে। বহরমপুরের সাংসদ কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরীও বলেছেন, “জেলা ভাগে আপত্তি নেই। তবে মুর্শিদাবাদ নাম রেখে তার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম যা হোক একটা কিছু রাখুন।’’ তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সাংসদ খলিলুর রহমানও ‘মুর্শিদাবাদ’ শব্দটি চান। বিজেপির বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ আবার মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। তৃণমূলের কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার অবশ্য বলেন, “আমার কাছে অগ্রাধিকার জেলার উন্নয়ন। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী যা ঘোষণা করেছেন, সেই মতো আমরা চলব।”
বাঁকুড়া ভেঙে বিষ্ণুপুর জেলা হওয়া নিয়েও রয়েছে দ্বিমত। অনেকেই বলছেন, পুলিশ, প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে। বিষ্ণুপুর মহকুমা লাগোয়া অন্য ব্লকের কিছু বাসিন্দাও নতুন জেলায় তাঁদের এলাকা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলছেন। তবে জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কতি-চর্চার পীঠস্থান বিষ্ণুপুরকে বাঁকুড়া থেকে আলাদা করে দেওয়ার প্রয়াস অনেকে মন থেকে মানতে পারছেন না। এ দিন বাঁকুড়ার মাচানতলায় প্রতিবাদ জানায় এবিভিপি।
নামের কথা ভুলতে পারছেন না বনগাঁ-বাগদা এবং সংলগ্ন এলাকার অনেকেই। উত্তর ২৪ পরগনার এই অংশ নিয়ে নতুন জেলা হচ্ছে ইছামতী। নামটি অনেকের পছন্দ। কিন্তু বেশ কিছু মানুষের আবার যুক্তি, বনগাঁর সঙ্গে দেশভাগ এবং মুক্তিযুদ্ধের সুদীর্ঘ ইতিহাস, ভাবাবেগ জড়িত। আর ইছামতী কেবল বনগাঁ নয়, নদিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবাহিত। তা হলে কেন বনগাঁ জেলার নাম ইছামতী হবে? বসিরহাটের বাসিন্দারা আবার চান, তাঁদের জেলার নামে যেন ‘বসিরহাট’ শব্দটি থাকে।
খুশি সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারাও। তবে তাঁদের প্রশ্ন, সুন্দরবন জেলায় কি দুই ২৪ পরগনার অংশই থাকবে? অনেকের মতে, হিঙ্গলগঞ্জ থেকে সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে আলাদা জেলা হলে প্রশাসনিক কাজে অসুবিধাই হবে বেশি। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে প্রান্তিক এলাকাগুলি থেকে যাতায়াত করা কঠিন। আবার শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনার অংশ নিলেও ক্যানিং থেকে কাকদ্বীপ যাতায়াত কঠিন। এই ভাগাভাগিতে মৎস্যজীবীদের বিধিনিষেধের মুখে পড়তে হবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের জয়নগর শাখার সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy