সদ্যপ্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। —ফাইল চিত্র
আলোচনা ছিল শোকপ্রস্তাব নিয়ে। সেই সূত্র ধরেই বিধানসভায় ফের উঠল সিঙ্গুর বিতর্ক।
ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের জন্য বিধানসভার দু’দিনের সংক্ষিপ্ত অধিবেশন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। প্রথামাফিক শোকপ্রস্তাবের পরেই মুলতবি হয়ে গিয়েছে প্রথম দিনের অধিবেশন। দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মতো সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের পাশাপাশিই বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার হায়দর আজিজ সফি এবং প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের নাম ছিল এ বারের শোকপ্রস্তাবে। নিরুপমবাবুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই এ দিন উঠেছে সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ। বামেরা দাবি করেছে, সিঙ্গুরে গাড়ির কারখানা না হয়ে আখেরে ক্ষতি হয়েছে গোটা রাজ্যেরই। বাম বিধায়কদের বক্তব্যের তুমুল বিরোধিতায় না গেলেও সরকার পক্ষের তরফে বলা হয়েছে, প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রীর পথের সঙ্গে সহমত না হলেও তাঁর আন্তরিকতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কোনও অসুবিধা নেই।
প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার সফির স্মৃতিচারণ করার অবসরেই নিরুপমবাবুর কথা এনে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান (ভিক্টর) রাম্জ বলেন, প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম করলে সিঙ্গুর ও শিল্পের প্রসঙ্গ আসবেই। সেই সময়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু গাড়ির কারখানা না হওয়ার ঘোষণার ১০ বছর পরে দাঁড়িয়ে গোটা বাংলাই এখন অনুভব করছে, তার ফলে রাজ্যের কী ক্ষতি হয়েছে। সিপিএম বিধায়ক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমানও উল্লেখ করেন, রাজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে শিল্পায়নের প্রচেষ্টায় নিরুপমবাবু সৎ ও আন্তরিক ছিলেন। প্রয়াত মন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের প্রশংসা শোনা গিয়েছে কংগ্রেসের উপ-দলনেতা নেপাল মাহাতোর মুখেও। তিনি বলেন, যে পথে শিল্পায়নের চেষ্টা হয়েছিল, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু সেই চেষ্টার উদ্দেশ্য রাজ্যের স্বার্থের পক্ষেই ছিল। বিধানসভার গত অধিবেশনেই লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাজনৈতিক তরজা বেধেছিল। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কিছু মন্তব্য সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরুপমবাবুর ক্ষেত্রে অবশ্য বিরোধীদের বক্তব্যের সময়ে শাসক বেঞ্চ থেকে হইচই শোনা যায়নি।
পরে শোকপ্রস্তাবের উপরে বলতে উঠে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, দলের নির্দেশই পালন করতেন নিরুপমবাবু। তাঁর শিল্পায়নের ‘স্বপ্নে’র সঙ্গে ‘বাস্তবে’র সব সময় মিল ছিল না। তাই বিরোধও বাধত। তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর হস্তক্ষেপে সিঙ্গুর নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের চুক্তিতে বিশেষ ভূমিকা ছিল তদানীন্তন শিল্পমন্ত্রীর। তিনিও চুক্তিতে সই করেছিলেন। তবে পার্থবাবু উল্লেখ করেছেন, তাঁদের বিরোধ ব্যক্তিগত ছিল না। সহমত না হলেও প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কোনও অসুবিধা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy