করোনা পরীক্ষা শিবিরে ভিড়। মাটিগাড়া ব্লক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ছবি: স্বরূপ সরকার।
কোথাও মোটা টাকার বিনিময়ে লজের মধ্যে রোগী রেখে নার্সিং হোমের চিকিৎসকেরা দেখছেন। অভিযোগ, বাড়িতে থাকলে তাঁরা দেখবেন না বলছেন। কোথাও প্রাণদায়ী ওষুধ, যা খোলাবাজারে নেই, তা কিনতে রোগীর পরিবারকে বলা হচ্ছে। শয্যা না-মেলা রোগীদের সমস্যা কী ভাবে মিটবে দেখার কেউ নেই। মারা গেলে প্রচুর টাকা খরচ করে দাহ করতে হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠছে।
সমন্বয় রেখে সমস্যাগুলি দেখার সুষ্ঠু ব্যবস্থা দার্জিলিং জেলা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরের নেই বলে অভিযোগ। চোখের সামনে এই পরিস্থিতি দেখে সমস্যাগুলি জানাতে মঙ্গলবার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন ফাইট করোনা এবং কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের কর্মকর্তারা। তার মধ্যে চিকিৎসকেরাও ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন নজরদারির জন্য গত বছরের মতো প্রশাসন জেলা টাস্ক ফোর্স তৈরি করে নজরদারি না করায় দুর্ভোগ চলছেই।
বুধবারই শপথ নিয়ে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে ‘ভিডিয়ো কনফারেন্সে’ কোভিড মোকাবিলায় কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শয্যা বাড়ানো থেকে অন্য পরিষেবাগুলি দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও জেলায় পরিষেবার দিকটি ঠিক হতে কত সময় লাগবে তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েইছে। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠীকে বারবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি। প্রতিবারই তাঁর ফোন ব্যস্ত দেখিয়েছে। মেসেজ করলেও উত্তর মেলেনি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘শয্যা বাড়ানো, চিকিৎসা পরিষেবার বিষয়টি দেখছি। লজে রেখে চিকিৎসার কোথায় কী ভাবে চলছে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক এবং শিলিগুড়ি ফাইট করোনা সংগঠনের কর্মকর্তা অনিমেষ বসু, কল্যাণ খানদের অভিযোগ, ‘‘জেলাশাসকের দফতরে যোগাযোগ করলেও উত্তর মিলছে না। নজরদারির জন্য জেলা টাস্ক ফোর্স নেই। তা করতে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বলা হয়েছে।’’
ভোট পরিস্থিতিতে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডগুলি ভেঙে একজন আধিকারিককে প্রশাসক করা হয়। ওয়ার্ডে কাউন্সিলর তথা কোঅর্ডিনেটররা আর নেই। গত বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য পুরভোট না হলেও বিদায়ী পুর-বোর্ডগুলোকেই প্রশাসক বোর্ডের দায়িত্ব দিয়ে পরিষেবা চালানোর যে ব্যবস্থা হয়েছিল তা বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধের জেরে প্রশাসনও সব কাজ করতে পারছিল না। তার মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ভোট হয়ে গেলে বিধিনিষেধের মধ্যেও করোনা মোকাবিলার মতো জরুরি বিষয়ে প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের চেষ্টায় কিছু ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ভোটের ফলে তিনি হেরে যেতেই সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। নোডাল অফিসার জেলাশাসক, আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে পরিস্থিতি মোকাবিলার আশ্বাস দিলেও তেমন কিছু হচ্ছে না। জেলায় সাড়ে তিন হাজারের মতো করোনা রোগী। শয্যার অভাব। মাটিগাড়ার একটি নার্সিং হোমে শয্যা চালুর কথা বলা হলেও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে বলা হয়েছে, তা রিজার্ভে রয়েছে। রোগীরা চেয়েও পাচ্ছেন না।
অভিযোগ, জায়গা দিতে না পেরে প্রধাননগরের এক নার্সিংহোম মোটা টাকায় লজে রোগী রেখে চিকিৎসা চালাচ্ছে। রোগীরা বাড়িতে থাকতে চাইলে পরিষেবা মিলছে না। নার্সিং হোমে গেলে মোটা টাকা দিতে হচ্ছে। রেমডেসিভির যা হাসপাতালে সরাসরি সরবরাহ হওয়ার কথা রোগীর লোকদের তা আনতে বলছে কিছু নার্সিংহোম তথা চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy