বিজেপি বিধায়কদের উপর ক্ষুব্ধ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের ১০২তম জন্মদিন। সেই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সিদ্ধার্থশঙ্করের ছবিতে মাল্যদান করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। তবে সেখানে হাজির ছিলেন না বিজেপির বিধায়কেরা। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিমান। একই সঙ্গে বিধানসভায় বাম এবং কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। বিজেপি যদিও জানিয়েছে, তাদের দলের বিধায়কেরা আলাদা ভাবে মাল্যদান করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভায় সিদ্ধার্থশঙ্করের ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন বিমান-সহ তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। পরে বিমান বলেন, ‘‘সিদ্ধার্থশঙ্করের জন্মদিনে কোনও বিরোধী দলই আগে এমনটা করেনি।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাম ও কংগ্রেসের প্রতিনিধি নেই, আমার খারাপ লাগছে। মানুষ তাদের উপর ভরসা রাখতে পারেনি। তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকলে ভাল হত। গত বছর বিধানসভা ভোট হয়েছিল সম্পূর্ণ সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে। তা সত্ত্বেও বাম ও কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি আসেননি বিধানসভায়।’’
স্পিকারের সঙ্গে সিদ্ধার্থশঙ্করের ছবিতে মালা দিতে একসঙ্গে আসেননি বিজেপি বিধায়কেরা। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় নৌশার আলী কক্ষে বিজেপির বিজয়া সম্মিলনী ছিল। সেখানে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি বিধায়করা। এ প্রসঙ্গে নাম না করে বাম-কংগ্রেসের প্রশংসা করেছেন স্পিকার। তিনি বলেন, ‘‘আগেও যারা বিরোধী ছিল, তাদের সঙ্গে বিধানসভার অন্দরে আমাদের সঙ্গে অনেক মতপার্থক্য হয়েছে। তারা আমার অনেক সিদ্ধান্ত মানতে পেরেছে, আবার অনেক সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি। তা বলে কাউকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর অনুষ্ঠানে এ ভাবে অসহযোগিতা করেনি তারা।’’ বিমান আরও বলেন, ‘‘পরিষদীয় গণতন্ত্রে এটা চলে না।’’
এ প্রসঙ্গে পাল্টা আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পৃথক ভাবে মাল্যদান করেছি। স্পিকারের সঙ্গে মাল্যদান করিনি। বৈষম্য যে দিন ঘুচবে সে দিন একসঙ্গে মঞ্চে ওঠা সম্ভব হবে।’’যদিও বিমানের মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নয় বামেরা। তাদের দাবি, বামেরা কোনও সময়েই সিদ্ধার্থশঙ্করের জন্মদিন পালন করে না। সত্তরের দশকের রাজনীতি এবং সেই সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্করের ভূমিকাই তার অন্যতম প্রধান কারণ। এক বাম নেতার কথায়, ‘‘সিদ্ধার্থবাবুর মৃত্যুর পর মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু সেটা সৌজন্য ছিল। বামেরা কোনও দিনই ওঁর জন্মদিনে অংশ নেয় না।’’
তবে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্করের জন্মদিন পালন করতেন তাঁর দলের বিধায়কেরা। বিধানসভার এক কর্মীর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের বিধায়কেরা প্রতি বছরই এই দিনে মালা দিতেন। কিন্তু এখন তো ওদের দলের কোনও বিধায়ক নেই। এমনিতে বিধায়ক না হলে কেউ এসে মালা দিতে পারবেন না তা নয়। স্পিকারের অনুমতি নিয়ে আসতেই পারেন।’’
কংগ্রেস সারা রাজ্য জুড়েই সিদ্ধার্থশঙ্করের জন্মদিন পালন করছে বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার। তিনি এ ব্যাপারে তৃণমূলকে কটাক্ষও করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিদ্ধার্থশঙ্কর এমন এক জন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসক ছিলেন, যিনি কখনও তাঁর গায়ে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির আঁচ লাগতে দেননি। আজ বাংলার যা পরিস্থিতি, সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁকে আরও বেশি করে স্মরণ করা প্রয়োজন। সারা রাজ্যে কংগ্রেস কর্মী এবং অন্যেরা পালন করছেন তাঁর জন্মদিন। বিধানসভায় আমাদের কোনও প্রতিনিধি নেই। তাই সেখানে স্মরণ করা সম্ভব হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy