পিৎজ়া, বার্গার থেকে শুরু করে নানা রকম প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে অতিরিক্ত কর বসানোর চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) সম্প্রতি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, শিশুরা তো বটেই, কমবয়সিদের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এই জাতীয় খাবার দোকানে, অনলাইনে সর্বত্র সহজলভ্য। ফলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে। স্থূলতার হারে এ দেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। সে কারণেই এই শ্রেণির খাবারের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।
আইসিএমআরের সঙ্গেই এই অভিযানে শামিল হয়েছে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন’ (এনআইএন)। স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, জাঙ্ক ফুডের বিক্রি উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। ফুলেফেঁপে উঠছে সংস্থাগুলির ব্যবসা। ক্রেতারা বেশির ভাগই শিশু বা কমবয়সি। সে কারণেই শৈশব থেকেই স্থূলত্ব বাড়ছে। আট থেকে দশ বছরের শিশুও আক্রান্ত হচ্ছে ডায়াবিটিস বা কিডনির জটিল অসুখে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নরম পানীয়, প্যাকেটবন্দি ভাজা খাবার, চকোলেট, নাগেটস, বেশি মাত্রায় চিনি-নুন মেশানো খাবারের উপর অতিরিক্ত কর বসানোর আবেদন করা হয়েছে। এই জাতীয় খাবারে ফ্যাট-সহ বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে, যা ছোট-বড় সকলের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর। প্রক্রিয়াজাত খাবার হার্টের রোগের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসাব অনুযায়ী ‘বডি মাস ইনডেক্স’ (বিএমআই) ২৫-এর বেশি হলে অতিরিক্ত ওজন বলে চিহ্নিত করা হয়। আর বিএমআই ৩০-এর বেশি হলেই তা স্থূলতার অবস্থা বলে ভাবা হয়। এক সময়ে মনে করা হত, কেবল উন্নত দেশগুলিতেই স্থূলতার সমস্যা বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতেও কমবয়সিদের মধ্যে স্থূলতা ক্রমবর্ধমান। আর যার প্রধান কারণই হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। নীতি আয়োগের সদস্য ভিকে পল জানাচ্ছেন, ১৫-৩৫ বছরের মধ্যে স্থূলতার হার সর্বাধিক এ দেশে। কারণ ওই বয়সিদের মধ্যে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। তা ছাড়া খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া)-র তত্ত্বাবধানে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর করুক স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অতিরিক্ত কর বসাতে যেমন হবে, তেমনই খাবারের মোড়কের উপরে সতর্কবার্তাও লিখতে হবে। স্কুল-কলেজের আশপাশে যে সব দোকান আছে, সেখানে বিক্রি হওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবারের মোড়কে সতর্কবার্তা লেখা হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে খেয়ালও রাখতে হবে। কড়া নিয়ন্ত্রণই দেশের কমবয়সিদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাবে।