মেয়ো রোডে অনশনকারীদের সঙ্গে শঙ্কুদেব পণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র
অনশনরত এসএসসি উত্তীর্ণদের পাশে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। অবিলম্বে চাকরি দিতে হবে, না হলে শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে— এই দাবি তুলে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে সোমবার অনশন শুরু করেছেন তিনি। সব নিয়ম ভেঙে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে এ বারের তৃণমূল প্রার্থী পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়েকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে, অথচ যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হচ্ছে না— অভিযোগ বিজেপি নেতার।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা এখনও চাকরি পাননি, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে তাঁদের অনশন সোমবার ১৯ দিনে পড়ল। এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানে পৌছন শঙ্কু। আন্দোলনকারী তথা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বিশদে কথা বলেন তিনি। স্কুল সার্ভিস কমিশন তথা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকারীরা যে সব অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন, সে সব অভিযোগ শঙ্কু সবিস্তার শোনেন। তার পরেই ঘোষণা করেন যে, তিনিও অনশন শুরু করছেন।
স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষায় ওঁরা পাশ করেছেন। কিন্তু চাকরি পাচ্ছেন না। নবম দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শূন্যপদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। অনশনে বসা ওই প্রার্থীদের নাম রয়েছে ওয়েটিং লিস্টে। তাঁদের দাবি, রাজ্যের স্কুলগুলিতে প্রচুর শূন্যপদ রয়েছে। এসএসসি কর্তৃপক্ষ সেই তালিকা আপডেট করলেই আরও শূন্যপদ হবে এবং তাঁরাও চাকরি পাবেন। এই তালিকা আপডেট এবং চাকরির দাবিতেই খোলা আকাশের নীচে অনশনে বসেছেন প্রায় ৪০০ পরীক্ষার্থী। ইতিমধ্যেতাঁদের ৫০ জনঅসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আরও পডু়ন: আজ প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করতে পারে বিজেপি, রাজ্যে কে কোথায় প্রার্থী, জল্পনা তুঙ্গে
এ দিন অনশনকারীদের দলে যোগ দিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর শঙ্কুর অভিযোগ, রাজ্যে প্রায় এক লক্ষ শিক্ষকের পদ ফাঁকা। অথচ এই ৬০০ প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর আরও অভিযোগ, এই চাকরিপ্রার্থীরা গণতান্ত্রিক ভাবে প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করছেন। অথচ রাতের অন্ধকারে গুন্ডা পাঠিয়ে তাঁদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে এত মহিলা রয়েছেন, তাঁদের জন্য কোনও শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ শঙ্কুর। একই সঙ্গে এ দিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীপার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শঙ্কু। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীহয় এঁদের চাকরি দিন, নইলে পদত্যাগ করুন। না হলে আমি এই বসলাম, আর উঠব না।’’
আরও পড়ুন: অভিষেকের নিরাপত্তায় বাড়াবাড়ির অভিযোগ তুলে দড়ির ব্যারিকেড খুলে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়
এসএসসি-র তালিকায় পরেশ অধিকারীর মেয়ের নাম থাকা নিয়েও এর আগে বিতর্ক তৈরি হয়। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে শঙ্কু কথা বলার সময় সেই প্রসঙ্গও ওঠে। আন্দোলনকারীদের কয়েক জন বলেন, ‘‘পরেশ অধিকারীর মেয়ে চাকরিতে যোগ দিয়ে মাইনে পেতে শুরু করেছেন। অথচ কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করেও আমরা চাকরি পাচ্ছি না।’’
তৃণমূল ছাড়ার পর দীর্ঘদিন কার্যত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরেই ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। সেই অর্থে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম কোনও আন্দোলনে যোগ দিতে দেখা গেল শঙ্কুকে। চাকরিপ্রার্থীদের এই অনশনে সমর্থন জানিয়ে রবিবারই বার্তা দিয়েছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। আন্দোলনকারীদের একটি দাবিপত্রে তিনি স্বাক্ষর করেন।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy