কম্বল না-আসায় মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের পরে প্রায় ফাঁকা মঞ্চ। মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্জে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শীতবস্ত্র এসেছিল। তবে সংখ্যায় অনেক কম। মুখ্যমন্ত্রী যখন মঞ্চে উঠে সেই শীতবস্ত্রের খোঁজ করলেন, তখন সেটি রয়েছে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে, হিঙ্গলগঞ্জের ব্লক অফিসে। তার পরের পনেরো মিনিট এক দিকে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ উগরে দেওয়া, অন্য দিকে ত্রস্ত প্রশাসনের বিকল্প ব্যবস্থার খোঁজ। শেষে ‘অন্য ব্যবস্থা’ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে মোট যে পনেরো হাজার শীতবস্ত্রের কথা বললেন, তার বদলে এত কম এল কেন? দ্বিতীয়ত, তা হলে কি প্রশাসনিক স্তরে বার্তা আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবধান ছিল, যার ফলে নবান্নের নির্দেশ পুরোপুরি এসে পৌঁছয়নি জেলা প্রশাসনের কাছে?
স্থানীয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২৬ নভেম্বর নাগাদ সরকারি ভাবে খবর আসে, সন্দেশখালি ১, ২, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ ও মিনাখাঁ ব্লকে ৩ হাজার করে শীতবস্ত্র পাঠানো হবে। সেগুলি ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর ব্লক অফিস ও পঞ্চায়েত অফিস থেকে বিলি করতে হবে। সেই মতো হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে ২৭ তারিখ ৩ হাজার শীতবস্ত্র পৌঁছে যায়। কালীতলা পঞ্চায়েত থেকে বারোশো শীতবস্ত্র বিলির কথা ভাবা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরদিন।
এই সূত্রের দাবি যদি ঠিক হয়, তা হলে বলতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী যে ২৯ তারিখ সামসেরনগরের মঞ্চ থেকে শীতবস্ত্র বিলি করবেন, তা জেলা প্রশাসন জানত না। কিন্তু সত্যি কি তাই?
রাজ্য প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, রীতি অনুযায়ী, এই ধরনের অনুষ্ঠানের আগে সবিস্তার তথ্য জেলাশাসককে জানিয়ে রাখে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থলে সিএমও-র আধিকারিকেরাও থাকেন। ফলে জেলা প্রশাসনের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা বা কর্মসূচি অজানা থাকা কার্যত অসম্ভব। তা ছাড়া, কোনও বিতরণ কর্মসূচি থাকলে সভাস্থলে মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছনোর বেশ কয়েক ঘণ্টা আগেই সামগ্রী পৌঁছে যায়। রাজ্য প্রশাসনের আরও বক্তব্য, ওই কর্মসূচির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও। তার পরেও এত বড় ভুল কী করে হল, তা নিয়ে বিস্মিত প্রশাসনের অনেকে।
রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্রের বক্তব্য, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী যথেষ্ট অভিজ্ঞ। চার দফায় জেলাশাসকের দায়িত্ব দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছেন তিনি। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর কাজের ধরন তাঁর অজানা থাকার কথাও নয়। এই নিয়ে জেলাশাসক এ দিন ফোন বা এসএমএসের কোনও জবাব দেননি। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ীও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও জেলা সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যে মঙ্গলবার সামসেরনগরের সভা থেকে সভায় আসা মানুষকে ১৫ হাজার শীত বস্ত্র বিলি করবেন— এমন কোনও ধারণা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের ছিল না।
তা হলে মুখরক্ষা হল কী ভাবে? প্রশাসন জানাচ্ছে, হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক অফিস থেকে যে গাড়িটি বারোশো শীতবস্ত্র নিয়ে কালীতলা যাচ্ছিল, সেটিই জরুরি নির্দেশে সভাস্থলে পৌঁছয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy