Advertisement
E-Paper

স্কুলে খাতা দেখায় ভরসা পার্শ্ব-শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্তেরা

এপ্রিলের শেষে গরমের ছুটির আগেই ফল প্রকাশের কথা। এই অবস্থায় কোথাও পার্শ্ব-শিক্ষক, কোথাও স্কুলের শিক্ষকদের পরীক্ষার বাড়তি খাতা দেখতে দেওয়া হয়েছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩২
Share
Save

শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের রায়ের সময় স্কুলগুলোতে পরীক্ষা চলছিল। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির সেই প্রথম পার্বিক পরীক্ষা (ইউনিট টেস্ট) শেষ হতেই খাতা নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্কুলগুলি। প্রশ্নপত্র তৈরি করলেও, চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে খাতা দেখতে চাইছেন না। বিতর্ক এড়াতে তাঁদের দিয়ে খাতা দেখাতেও চাইছেন না একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, এপ্রিলের শেষে গরমের ছুটির আগেই ফল প্রকাশের কথা। এই অবস্থায় কোথাও পার্শ্ব-শিক্ষক, কোথাও স্কুলের শিক্ষকদের পরীক্ষার বাড়তি খাতা দেখতে দেওয়া হয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বীরগ্রাম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নেই। অগত্যা পার্শ্ব-শিক্ষক ও বাকি শিক্ষকদের পরীক্ষার খাতা দেখার বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের ভাগাবাঁধ হাই স্কুলে চাকরি বাতিল হয়েছে পাঁচ জনের। প্রধান শিক্ষক সুকুমার ধীবর বলেন, ‘‘বর্তমানে গণিতের শিক্ষক এক জন। তাঁকে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির অন্তত এক হাজার খাতা দেখতে হবে। এটা কী ভাবে সম্ভব? ইতিহাস বা বাংলার শিক্ষক তো উঁচু ক্লাসের অঙ্কের খাতা দেখতে পারবেন না!’’

নদিয়ার দেবগ্রাম ডি কে গার্লস হাই স্কুলের ১৬০০ পড়ুয়ার খাতা দেখে নম্বর পোর্টালে আপলোড করা নিয়ে চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষিকা রীতা দত্ত বলেন, “দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট হাজার খাতা মূল্যায়ন করতে হবে। অথচ, স্কুলে এখন এক জনই অঙ্কের শিক্ষক।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের খেপুত হাই স্কুলের টিচার ইনচার্জ চন্দন ভট্টাচার্য জানান, এক জন চাকরিহারা শিক্ষক স্কুলে এসে খাতা নিয়ে গিয়েছেন। আর কেউ আসেননি। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের আমগোড়িয়া-গোপালপুর আরজিএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ সরেন জানান, স্কুলের প্রায় হাজার পড়ুয়া পার্বিক পরীক্ষা দিয়েছে। তার সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকের খাতাও শিক্ষকদের দেখতে হচ্ছে। ফলে, কবে খাতা দেখা হবে, কবে ফল প্রকাশ করা যাবে— সব কিছুই এখন অনিশ্চিত। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের হাজিনগর আদর্শ হিন্দি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবেন্দ্রনাথ দুবে বলেন, ‘‘সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী, ১৮ জন শিক্ষক বাতিল হয়েছেন। পর্ষদের কাছে অনুরোধ করেছি, খাতা দেখা কী করে হবে, জানাতে।’’

আলিপুরদুয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশানুল করিম মানছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে যেহেতু শিক্ষিকদের একাংশ স্কুলে যাচ্ছেন না, তাই বাকিদের ক্লাস করানোর পাশাপাশি পরীক্ষার খাতা দেখায় চাপ হবে।’’ সে চাপমুক্তির উপায় খুঁজছে স্কুলগুলি। হুগলির উত্তরপাড়া অমরেন্দ্র নাথ বিদ্যাপীঠের (বালক বিভাগ) পরিচালন সমিতির সভাপতি উৎপলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা প্রাক্তন শিক্ষকদের অনুরোধ করেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে। অনুরোধে সাড়া দিয়ে দুই শিক্ষক স্কুলে আসছেন। তাঁদের আমরা বিধিবদ্ধ ভাবে চিঠি দিয়ে স্কুলের তরফে গ্রহণ করেছি। খাতা দেখা থেকে পড়ানো, সবই তাঁরা করবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Recruitment Case School Teachers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}