সালকিয়ায় বাম মিছিলে বাধা। অবস্থান বিক্ষোভে বিমান বসু। নিজস্ব চিত্র।
বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে ও সম্প্রীতি রক্ষার ডাকে বামেদের পদযাত্রাকে কেন্দ্র করেও ধুন্ধুমার-কাণ্ড বেধে গেল হাওড়ায়। বামেদের দাবি অনুযায়ী পদযাত্রার নির্ধারিত পথে যেতে বাধা দেওয়ায় বাম নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি হল। ধাক্কাধাক্কিতে রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাল্কা চোট পেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মিছিলের একটা অংশকে সালকিয়া চৌরাস্তায় আটকে দেওয়ার প্রতিবাদে সেখানেই রাত পর্যন্ত অবস্থান-বিক্ষোভ হল বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর নেতৃত্বে।
পরিস্থিতি সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ নামানো হয়েছিল। বামেদের অভিযোগ, সোমবারের শান্তি মিছিলে পুলিশ শুধু লাঠিই চালায়নি, মিছিলের একটি গাড়িও ভাঙচুর করেছে। বিমানবাবুর অভিযোগ, ‘‘অশান্তি করতে যারা এসেছিল, তাদের পুলিশ আটকাতে পারল না! শান্তি মিছিলে বাধা দিচ্ছে!’’ পদযাত্রায় বাধা দেওয়া প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশিই রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘শান্ত এলাকায় আবার শান্তি মিছিল! সিপিএম এখন প্রচারে আসার জন্য নাটক করছে!’’ আর পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, মিছিলের অনুমতি ছিল না। তা সত্ত্বেও মিছিলকে পুরোপুরি বাধা না দিয়ে ‘স্পর্শকাতর’ এলাকা এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছিল।
সম্প্রীতির ডাকে রবিবার বামেদের পদযাত্রা ছিল হুগলি জেলায়। যেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বালিখাল থেকে এ দিন শিবপুর ট্রাম ডিপো পর্যন্ত পদযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছিল। মিছিলে বিমানবাবু, রবীন দেব, শ্রীদীপ ভট্টাচার্যদের পাশাপাশি ছিলেন পরেশ পাল-সহ হাওড়া জেলার বাম নেতৃত্ব। অংশগ্রহণ করেছিল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, এসইউসি-ও। সূত্রের খবর, মিছিলটি সালকিয়ায় পৌঁছনোর পরে পুলিশ বাম নেতাদের বলে, পিলখানা এলাকার উপর দিয়ে মিছিল করা যাবে না। ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু বাম কর্মী ও সমর্থকেরা পুলিশের বাধা মানতে চাননি। মিছিলের একটা অংশ সেলিমের নেতৃত্বে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। ব্রিজ অ্যান্ড রুফের দিকে এগিয়ে সেখানেই মাইক নিয়ে সভা শুরু করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
আরও বড় ব্যারিকেড করে মিছিলের বাকি অংশকে সালকিয়া চৌরাস্তায় আটকে দেয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। অশীতিপর বিমানবাবু তখন চৌরাস্তাতেই বাম কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। পদযাত্রা ও গোলমালের জেরে জি টি রোড সর্ম্পূণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যানজটে জড়িয়ে পড়ে গোটা সালকিয়া এলাকা। ঘটনা প্রসঙ্গে সেলিমেরও বক্তব্য, ‘‘বন্দুক পিস্তল, তলোয়ার নিয়ে যখন মিছিল হয়েছে, পুলিশ তখন আটকায়নি! অথচ বিমান বসুদের শান্তি মিছিল করতে আটকাচ্ছে। আমরা মানুষের মনে ভরসা বাড়াতে এই মিছিল করছিলাম। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য এ রাজ্যে শুধু আতঙ্কের পরিবেশ বজায় রাখতে চাইছে। পুলিশ চায়নি আমরা শান্তির কথা বলি।’’
পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, বালিখাল থেকে শুরু হওয়া ওই মিছিলের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বামেদের তরফে প্রথমে দক্ষিণ হাওড়ার কাজীপাড়া পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটা যেমন দেওয়া হয়নি, তেমনই ব্রিজ অ্যান্ড রুফ পর্যন্তও মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা শুধু মিছিলকারীদের বলেছিলাম, স্পর্শকাতর এলাকা দিয়ে মিছিল করা যাবে না। তাই পিলখানার আগে সালকিয়া চৌরাস্তায় মিছিল আটকানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy