Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪

নম্বর-সর্বস্ব পরীক্ষা ব্যবস্থার জন্যই কি অসহায় পড়ুয়ারা?

প্রশ্ন উঠছে, এই নম্বর-সর্বস্ব পরীক্ষাই কি পড়ুয়াদের আরও বেশি অসহায় করে তুলছে? কারণ, ৯৯ শতাংশ নম্বরই অনেকে পেলে কলেজে ঢোকার ন্যূনতম নম্বর বাড়বেই, প্রতিযোগিতার চাপও বাড়বে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:২২
Share: Save:

আইএসসি পরীক্ষায় চারশোয় চারশোয় পেয়ে, যুগ্ম ভাবে প্রথম দেবাং কুমার আগরওয়াল বলেছিল, ‘‘এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছে যাব, ভাবতে পারিনি।’’ এভারেস্টের চূড়া মানে ১০০ শতাংশ নম্বর। আর এই চূড়ায় পৌঁছতেই তীব্র প্রতিযোগিতা আর মেধা তালিকায় ‘ট্র্যাফিক জ্যাম’। মাধ্যমিকে প্রথম দশে ৫১ জন, ৯৯ শতাংশও নম্বরও পেয়েছেন অনেকে।

প্রশ্ন উঠছে, এই নম্বর-সর্বস্ব পরীক্ষাই কি পড়ুয়াদের আরও বেশি অসহায় করে তুলছে? কারণ, ৯৯ শতাংশ নম্বরই অনেকে পেলে কলেজে ঢোকার ন্যূনতম নম্বর বাড়বেই, প্রতিযোগিতার চাপও বাড়বে।

কলকাতার শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য মনে করেন, পরীক্ষার পদ্ধতিই বদল করা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘অঙ্কে কেউ একশোয় একশো পেতে পারে। কিন্তু ইতিহাসে কী ভাবে পায়? শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়ায় গলদ। বিশাল নম্বর পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, এত নম্বর আর পায় না, হয়তো পরবর্তীকালে জীবনের কোনও পরীক্ষাতেই তা পায় না। কিন্তু তত দিনে বেশি নম্বর পাওয়ার প্রত্যাশা তৈরি হয়ে যায়।’’

মর্ডান হাই স্কুলের ডিরেক্টর দেবী করের মতেও, ১০০-য় ১০০ পাওয়ার এই প্রতিযোগিতা ‘মারাত্মক অসুখ’। তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে হয়তো ভাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলে যাচ্ছে। কিন্তু আখেরে লাভ হচ্ছে না। কারণ, পরের পরীক্ষায় পড়ুয়ারা এই সাফল্য ধরে রাখতে পারছে না। চাপ নিতে না পেরে আইআইটি ছেড়ে দিচ্ছে। বরং যারা আশি শতাংশ নম্বর পাচ্ছে, তারা পরে সফল হচ্ছে।’’

আইসিএসই স্কুলের প্রিন্সিপালদের সংগঠনের সর্বভারতীয় সহসভাপতি সুজয় দাস অবশ্য শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ আছে বলে মনে করেন না। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের চাহিদা থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। আর মানুষের চাহিদাই হল এখন একশোয় একশো বা তার কাছাকাছি নম্বর পাওয়া। তা না পেয়েও যে জীবনে সফল হওয়া যায়, তা সবাই বোঝে না। কাউন্সেলিং দরকার অভিভাবকদেরও।’’

অভিভাবকদের কাউন্সেলিং দরকার বলে মনে করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাসও। তিনি বলেন, ‘‘মা-বাবারা নিজেদের ইচ্ছাকে ছেলেমেয়েদের উপরে চাপিয়ে দেন। বেশি নম্বর পাওয়ার চেষ্টায় সন্তানদের রাতে ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে কি না, সে দিকে তাঁদের নজর নেই।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Score Examination School Teaching method
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy