Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur University

ইস্তফা ডিনের, অভিযুক্ত ছাত্র সংসদ নেতা

উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু জানান, তিনি ডিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০৫:১৮
Share: Save:

ছাত্র সংসদের পাঠানো ই-মেলের ভাষা নিয়ে আপত্তি তুলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের তদানীন্তন ডিন অক্টোবরে পদত্যাগ করেছিলেন। স্নাতকোত্তরে ভর্তি নিয়ে ছাত্র সংসদের সদস্যদের ব্যবহারে অপমানিত হয়ে মঙ্গলবার ইস্তফা দিয়েছেন বিজ্ঞান বিভাগের ডিন সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে বেশি রাত পর্যন্ত তা গৃহীত হয়নি।

পড়ুয়াদের ভাষা ও আচরণে অপমানিত হয়ে দু’মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের দু’জন ডিনের ইস্তফার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে শিক্ষা শিবিরে।

দু’টি ঘটনাতেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে। ছাত্র সংসদের কাছে বার বার অপমানিত হওয়ার কথা পদত্যাগপত্রে লিখেছেন সুবীরবাবু। ছাত্র সংসদের সভাপতি জ্যোতির্ময় বিশ্বাসের নামে সরাসরি অভিযোগ করেছেন তিনি। অভিযুক্ত জ্যোতির্ময় এই বিষয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘এই ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যা বলার বলব।’’

অতিমারির আবহে স্নাতকোত্তরে এ বার ভর্তি নেওয়া হচ্ছে ৮০-২০ ফর্মুলায়। যাদবপুরের পড়ুয়াদের জন্য ৮০ শতাংশ এবং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য ২০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানের ছাত্র সংসদের দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পাশ করা সব স্নাতককেই স্নাতকোত্তরে ভর্তি নিতে হবে। এবং সান্ধ্য বিভাগে নয়, সকলকে ভর্তি নিতে হবে দিবা বিভাগেই। প্রয়োজনে দিবা বিভাগে গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নের আসন বাড়িয়ে ঠাঁই দিতে হবে সকলকে। কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হননি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বিজ্ঞানে আসন বাড়ালে ল্যাবরেটরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দেয়। গণিতের আসন বাড়ালে পড়ুয়াদের বসতে দেওয়ার জায়গা থাকবে না।

ভর্তি কমিটিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত (৮০-২০ ফর্মুলায় ভর্তি) বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ বদল করতে চাননি। ডিনের কাছে ছাত্র সংসদের দাবি ছিল, ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে নিজেদের সব ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি নিতে হবে। ডিন জানিয়ে দেন, ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল করার ক্ষমতা তাঁর নেই। এই নিয়ে টানাপড়েনের ফলে স্নাতকোত্তর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির প্রক্রিয়া এ দিন পর্যন্ত শুরুই করা যায়নি।

ডিনের পদত্যাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক সমিতি জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘বার বার ছাত্রছাত্রীদের আচরণে শিক্ষকেরা অপমানিত হতে থাকলে কোনও শিক্ষকই আর এগিয়ে এসে তাঁর কাজের বাইরে অন্য দায়িত্ব নিতে চাইবেন না। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশই বিঘ্নিত হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সমিতিও বিষয়টির নিন্দা করেছে।

উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু জানান, তিনি ডিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। তিনি পড়ুয়াদের এটাই বলতে চান যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের গুণমান অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর বিষয়টি মাথায় রেখে বাস্তব পরিস্থিতিটা মেনে নেওয়া দরকার। ‘‘কর্তৃপক্ষ কখনওই ছাত্রস্বার্থের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন না,’’ আশ্বাস দেন উপাচার্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy