ফাইল চিত্র।
নিম্নতম স্তর থেকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে সব মহল খুশি ঠিকই। তবে তৈরি হওয়ার জন্য একটু সময় পেলে ভাল হত বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্কুল-কর্তৃপক্ষ। কারণ, কমবেশি দু’বছর বন্ধ থাকায় শ্রেণিকক্ষ এবং স্কুলপ্রাঙ্গণ সাফসুতরো করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস আগে চালু হলেও প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ ছেড়ে আজ, বুধবার নিজের নিজের স্কুলে ফিরছে। তাদের স্বাগত জানাতে মঙ্গলবার শিক্ষাঙ্গন প্রস্তুত করতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। তবে ওই স্তরের পড়ুয়াদের জন্য বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুল খুলতে এখনও কিছুটা দেরি আছে।
দু’বছর বন্ধ থাকায় অনেক প্রাথমিক স্কুলেই চেয়ার-টেবিলের অবস্থা ভাল নয়। ধুলো ঝেড়ে, সারাইয়ের কাজ করে এক দিনের মধ্যে স্কুলকে উপযোগী করে তুলতে এ দিন ব্যস্ত থাকতে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের। অনেক ক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষ ও স্কুল-চত্বর স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলে রাত পর্যন্ত। বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির স্কুল খোলার জন্য কয়েকটা দিন সময় দরকার ছিল।
মেট্রোপলিটন স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, বিকেলেও স্কুল ধোয়ামোছার কাজ চলছে। শিক্ষিকা শঙ্করী চন্দ্র জানান, প্রাথমিক বিভাগ খোলার সঙ্গে সঙ্গেই মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করতে হবে। বেহালার ভোলানাথ হালদার স্মৃতি গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বর্ণালী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এক দিনের নোটিসে স্কুল খুলতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ দিনেও পাড়ায় শিক্ষালয় চলেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেখানে ব্যস্ত থাকায় স্কুল পরিষ্কার করার কাজে থাকতে পারেননি। তার উপরে ছোট স্কুলের মধ্যে সকলকেই করোনা বিধি মেনে বসাতে হবে।” একসঙ্গে সব ছাত্রছাত্রীকে আসতে বলা হল কেন, সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, বুধবার থেকে সব পড়ুয়াকে আসতে হবে আবার আগেকার কোভিড গাইডলাইন মানতে হবে বলে জানানো হয়েছে। পারস্পরিক দূরত্ব-বিধি মানা হবে কী ভাবে? বালিগঞ্জ শিক্ষাসদনের প্রধান শিক্ষিকা সুনীতা সেন অবশ্য জানান, বুধবার থেকে আসবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা। আগামী সোমবার থেকে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা আসবে। সুনীতাদেবী বলেন, “প্রাথমিক স্কুলভবনকে ভাল করে স্যানিটাইজ় করে তার পরেই ওদের ডাকব।” তারাতলার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সঞ্জিত রাই জানান, এক দিকে মঙ্গলবার পাড়ায় শিক্ষালয়, অন্য দিকে আবার স্কুল স্যানিটাইজ়েশন। দু’টি কাজ একসঙ্গে করা যায়নি। বুধবার সকালে স্যানিটাইজ়েশন হবে।
তবে যে-সব স্কুলের প্রাথমিক বিভাগ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সঙ্গেই রয়েছে, সেখানে জীবাণুনাশের কাজ করতে অসুবিধা হয়নি বলে জানান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানান, যে-সব ঘরে অষ্টম-দ্বাদশের ক্লাস হচ্ছে, সকালে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা সেখানেই বসবে। তাই আলাদা করে স্যানিটাইজ় করার সমস্যা নেই।
স্কুল চালুর পরে নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশনের জন্য টাকা নেই বলে জানান বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা। তিনি বলেন, “স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ বিভিন্ন খাতে কম্পোজিট গ্রান্ট দেওয়া হয়। সেই তহবিল থেকেই জীবাণুমুক্তির কাজ চলছে। কিন্তু সম্প্রতি ওই তহবিলের পরিমাণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্কুলে নিয়মিত স্যানিটাইজ় করতে হলে তহবিলে টাকার জোগান বাড়াতে হবে।”
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “কম্পোজিট গ্রান্টের টাকা নিয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষের চিন্তার কারণ নেই। তহবিলের পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু সব স্তরের স্কুলকেই করোনা বিধি মেনে চলতে হবে। আলাদা নির্দেশিকা না-থাকলেও কী ভাবে সেই বিধি মেনে ক্লাস চলবে, তা স্কুল-কর্তৃপক্ষই ঠিক করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy