Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Saugata Roy

কাঁথি কারও জমিদারি নয়, শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার সৌগত-ফিরহাদের

শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কাঁথির সভা তৃণমূলের কাছে ছিল কার্যত শক্তি প্রদর্শনের মিছিল। মিছিলের পর কাঁথিতে জনসভা। 

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:১৪
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকে দাঁড়িয়ে তাঁকে কড়া কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন সৌগত রায়ফিরহাদ হাকিম। বুধবার কাঁথির সভায় ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘মিরজাফর’-এর মতো বাছা বাছা বিশেষণে আক্রমণ করলেন সৌগত। সঙ্গে বলেন, ‘‘কাঁথি কারও জমিদারি নয়।’’ বিজেপি-তে যোগ দিয়ে শুভেন্দু ‘নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে অপমান করেছেন’ বলে তোপ দাগলেন ফিরহাদও। পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে আক্রমণের জবাবে শুভেন্দুকে সেই তিরেই বিঁধেছেন ফিরহাদ।

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কাঁথির সভা তৃণমূলের কাছে ছিল কার্যত শক্তি প্রদর্শনের মিছিল। মিছিলের পর জনসভা। তৃণমূলের এই মিছিল এবং সভা রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শুভেন্দু দল ছাড়লেও তৃণমূলের যে তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি, মিছিল ও সভা থেকে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন দলীয় নেতৃত্ব। সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল শিশির অধিকারীকে। কিন্তু তিনি শারীরিক অসুস্থতার জন্য জনসভায় থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়েছিলেন।

তবে শক্তি প্রদর্শনের বদলে কার্যত হয়ে ওঠে শুভেন্দুকে আক্রমণের সভা। কাঁথি কার্যত অধিকারী পরিবারের গড়। শুভেন্দুর বাবা শিশির কাঁথির সাংসদ, ভাই দিব্যেন্দু তমলুকের সাংসদ এবং ছোট ভাই সৌমেন্দু কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান। কিন্তু সৌগত এ দিন বলেন, ‘‘কাঁথি কারও জমিদারি নয়।’’ নন্দীগ্রামের আন্দোলন থেকে উঠে এসেছিলেন শুভেন্দু। সেই প্রসঙ্গে সৌগতর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন করেছিলেন শেখ সুপিয়ানরা। শুভেন্দুকে বাইরে থেকে এনে তাঁরাই নেতা বানিয়েছিলেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে না গেলে সেই আন্দোলনকে দেশে এত বড় জনপ্রিয়তা পেত না।’’

আরও পড়ুন: ‘ফুলস্টপ বলে কিছু নেই রাজনীতিতে’, জিতেন্দ্রর ফেসবুক পোস্টে নয়া জল্পনা

আরও পড়ুন: ফুলমেলায় রাজীব বসলেন পার্থর পাশে, বেরিয়ে বললেন, কোনও দূরত্ব নেই

শুভেন্দুর তৃণমূল থেকে বিচ্ছেদ-পর্বে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছিলেন সৌগত। সেই প্রসঙ্গ টেনে সৌগত বলেন, ‘‘অভিষেক, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক হল শুভেন্দুর। তখন শুভেন্দু বললেন, অভিষেকের সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু পরের দিনই বেঁকে বসলেন। এই রকম বিশ্বাসঘাতক, মিরজাফরকে মানুষ ক্ষমা করবে না।’’ এ ছাড়া কৃষক আইন, বেসরকারিকরণের মতো একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপিকেও আক্রমণ করেছেন সৌগত।

শুভেন্দু পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা শুভেন্দুর সেই অস্ত্রেই তাঁকে বিঁধেছেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘এত অল্প বয়সে আপনি টিকিট পেয়েছিলেন। কোন আন্দোলন করেছেন? কেন টিকিট পেয়েছিলেন? শিশির অধিকারীর জন্য পেয়েছিলেন। আর আপনি বলছেন পরিবারতন্ত্রের কথা!’’ কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহের উদাহরণ দিয়ে বিজেপি-তেও যে পরিবারতন্ত্র প্রবল, সেটাও বোঝাতে চেয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী।

নন্দীগ্রামে কৃষকদের আন্দোলন নিয়েও শুভেন্দুকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ফিরহাদ। শুভেন্দুকে নিশানা করে ফিরহাদের বক্তব্য, ‘‘আপনি নন্দীগ্রামের আন্দোলন করেছিলেন। আর সেই নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে এ ভাবে প্রতারণা করলেন? সারা দেশে কৃষকরা আন্দোলন করছেন নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। এই সরকার কৃষকদের বিক্রি করে দিচ্ছে। একটা সময় আসবে, যখন কৃষকদের সব জমি কর্পোরেট সংস্থার হাতে চলে যাবে। আর কৃষকরা নিজেদের জমিতে দিনমজুরি করবেন। আর সেই দলে গিয়ে আপনি নাম লেখালেন?’’ শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ায় দলের সাধারণ কর্মীরা খুশি হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন ফিরহাদ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy