Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের ‘জিনা হারাম’, দলকেও হুঁশিয়ারি শওকতের

বিধায়ক শওকত মোল্লা বিরোধীদের ‘জিনা হারাম’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন। সেই সঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলের ফল ভাল না হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও জানালেন।

শওকত মোল্লা।

শওকত মোল্লা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২০
Share
Save

রাজ্য পুলিশের হাত থেকে ভাঙড় গিয়েছে কলকাতা পুলিশের অধীনে। তবু ভাঙড়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষ থামেনি। আইএসএফ-তৃণমূল কংগ্রেস সংঘর্ষে শনিবারও গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে ভাঙড়ের পোলেরহাট থানা এলাকায়। এই আবহেই ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বিরোধীদের ‘জিনা হারাম’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন। সেই সঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলের ফল ভাল না হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও জানালেন। বিরোধীদের যদিও কটাক্ষ, ভয় থেকেই এমন মন্তব্য।

ভাঙড় থানার বড়ালী সবুজ সঙ্ঘের মাঠে রবিবার ভাঙড়-১ পঞ্চায়েত সমিতির ৯টি অঞ্চলের কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন ডেকেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্ব। সেখানে শওকত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শাহজাহান মোল্লা, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঝর্না মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির ভূমির কর্মাধ্যক্ষ আহসান মোল্লা প্রমুখ।

সম্মেলনেই শওকত এ দিন বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে ভাঙড়ের যে সব অঞ্চলে তৃণমূলের ভাল ফল হবে না, সেই অঞ্চলের সভাপতি, প্রধান, উপ-প্রধান, কর্মাধ্যক্ষ এবং বুথ সভাপতিদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।” তাঁর সংযোজন, “দল ছিল বলে আজ আমরা পঞ্চায়েত চালাচ্ছি। এ বার থেকে প্রতিটি পঞ্চায়েতে তিন জন করে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হবে। ওই পর্যবেক্ষকেরা পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করবেন। কোথাও কোনও দুর্নীতি, খারাপ কাজ হলে সেই পঞ্চায়েত প্রধানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে!”

দলকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশিই শওকত বিরোধীদেরও চড়া সুরে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “রাজনৈতিক লড়াইয়ে দু-এক জন খুন হলেও শত্রুর সঙ্গে কোনও সমঝোতা করব না।” তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষের প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করে তাঁর হুঁশিয়ারি, “প্রশাসন যদি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করে, তা হলে এলাকার জনগণ তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। বোদরা এলাকায় তাদের জিনা হারাম করে দেওয়া হবে!’’ রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, তৃণমূল বিধায়কের হুঁশিয়ারি ছিল মূলত আইএসএফ-কে ইঙ্গিত করেই। গত বিধানসভা ভোটে ভাঙড় থেকে আইএসএফের নওসাদ সিদ্দিকী জয়ী হওয়ার পরে এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ চলেছে অবিরাম। শাসক দলের বিরুদ্ধে যেমন হামলার অভিযোগ করেছে আইএসএফ, তেমনই পাল্টা অভিযোগে সরব তৃণমূলও।

শওকতের মন্তব্য প্রসঙ্গে আইএসএফের ভাঙড়-২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেছেন, ‘‘তৃণমূল মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করতে পছন্দ করে। তাই ওরা এ সব কথা বলছে। যদি নিরপেক্ষ ভোট হয়, তা হলে ওরা হেরে যাবে।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষের বক্তব্য, ‘‘শওকতের এমন ঘোষণা থেকেই পরিষ্কার, ওরা হেরে যাবে! বিগত দিনে ওরা কী ভাবে ভাঙড়ে ভোট লুট করেছে তা মানুষ জানে।” রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “দলের ভাবনা, অবস্থান, কর্মসূচি এত স্পষ্ট ভাবে ব্যক্ত করার জন্য ওঁকে তৃণমূলশ্রী পুরস্কার দেওয়া উচিত!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Saokat Molla TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}