Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sankrail

মারধর-ছেঁকা, ডাইন অপবাদে নিগ্রহ

প্রৌঢ়ার অভিযোগ, গ্রামবাসীরা তাঁকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করে। লোহার শলা গরম করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছেঁকাও দেওয়া হয়।

হাতে ছেঁকার ক্ষত নিয়ে প্রৌঢ়া। নিজস্ব চিত্র

হাতে ছেঁকার ক্ষত নিয়ে প্রৌঢ়া। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৫:২৯
Share: Save:

ডাইনি অপবাদে প্রথমে মারধর, তার পরে লোহা গরম করে সারা শরীরে ছেঁকা দিয়ে নিগ্রহ। রবিবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সন্ধ্যাতেই নির্যাতিত হলেন বিধবা এক শবর প্রৌঢ়া। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার খুদমরাই পঞ্চায়েতের ভালকিশোলে। সারা শরীরে পোড়া দাগ নিয়ে ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি বছর ছাপ্পান্নর ওই মহিলা।

ঘটনায় গ্রামের তিন মাতব্বরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির করা হলে তিন জনেরই তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। ঘটনায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোরও। ধৃত ও অভিযুক্তেরা বিজেপি কর্মী বলেই পরিচিত।

ভালকিশোলের শবরপাড়ায় থাকেন ওই মহিলা। দিনমজুরি করেন। ছেলে দিনমজুরি করেন। কয়েক দিন আগে লাগোয়া বাগমারি গ্রামের আদিবাসী পাড়ার এক শিশু তাঁর উঠোনে খেলার সময়ে দাঁতকপাটি লেগে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পরেই গ্রামের মাতব্বর রবীন্দ্র হাঁসদার উদ্যোগে জানগুরুর নিদান নিয়ে মহিলাকে ডাইনি সাব্যস্ত করা হয়। রবিবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্রর নেতৃত্বে কয়েক জন তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে রবীন্দ্রর বাড়ির উঠোনেই সালিশিসভা বসিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।

প্রৌঢ়ার অভিযোগ, রবীন্দ্র হাঁসদা, তাঁর স্ত্রী দুলালি এবং শাশুড়ি ছাড়াও গ্রামবাসী সুধীর হেমব্রম, ভীম সরেন, ভীমের ছেলে তরুণ তাঁকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করে। লোহার শলা গরম করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছেঁকাও দেওয়া হয়। প্রৌঢ়া জানান, তাঁকে পুড়িয়ে মারার নিদান দেওয়া হয়েছিল। গ্রামবাসীর একাংশের তৎপরতায় তিনি রেহাই পান। সোমবার লিখিত অভিযোগ করেন তাঁর ছেলে। সোমবার দুপুরে সুধীর, ভীম ও তরুণকে গ্রেফতার করা হয়। রবীন্দ্র সপরিবার পলাতক।

খুদমরাই পঞ্চায়েতটি বিজেপির দখলে। রবীন্দ্রও সক্রিয় বিজেপি কর্মী। সাঁকরাইল ব্লক যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি সারা দেশে অবিজ্ঞান-অন্ধবিশ্বাস ছড়াতে চাইছে। ভালকিশোলের ঘটনাও তার প্রমাণ।’’ ভালকিশোলে পঞ্চায়েত সদস্য তথা বিজেপি-র উপপ্রধান দয়ানিধি মাহাতো অবশ্য বলছেন, ‘‘আদিবাসী সমাজের কুসংস্কার থেকে এমন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তরা বিজেপির কেউ নন।’’ সাঁকরাইলের বিডিও মিঠুন মজুমদার জানান, ওই গ্রামে সচেতনতা কর্মসূচি হবে। নির্যাতিতার পরিবারকে প্রশাসনের তরফে সাহায্যও করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sankrail Witchcraft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy