গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সন্দেশখালিতে আপাত শান্তি। কিন্তু সন্দেশখালি নিয়ে অশান্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে রাজনীতি এবং প্রশাসনিক আঙিনায়। সোমবার, এক দিকে যেমন কলকাতা হাই কোর্ট সেখানে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। অন্য দিকে, সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের আর্জি শোনেনি সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, মণিপুরের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা হয় না। যদিও সোমবারই এই সন্দেশখালির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গোটা রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। প্রসঙ্গত, একই মতপ্রকাশ করেছিলেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ হালদারও। এই সন্দেশখালি নিয়ে রাজনীতির পারদও চড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে সন্দেশখালিতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। তবে বেঁধে দিয়েছে একাধিক শর্তও। যে শর্ত মেনে মঙ্গলবারই আবার সন্দেশখালি যাবেন বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন শুভেন্দু। পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতা ধন্যবাদ জানিয়েছেন আদালতকেও। মঙ্গলবার শুভেন্দুর পাশাপাশি সন্দেশখালি অভিমুখে যাবেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটও। কিন্তু প্রশ্ন হল, বৃন্দাকে কি সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেবে প্রশাসন?
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে ইডির আধিকারিকেরা তল্লাশিতে যান। কিন্তু শাহজাহান অনুগামীদের তাণ্ডবে সে যাত্রায় মাঝপথেই ‘রণে ভঙ্গ’ দিতে হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। তার পর থেকেই ক্রমশ উত্তাপ বাড়ছিল উত্তর ২৪ পরগনার এই গ্রামীণ জনপদের। ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকে যা চরমে পৌঁছয়। লাঠি হাতে পথে নামেন এলাকার মহিলারা। জল গ়ড়ায় রাজধানী দিল্লি পর্যন্ত। যার অভিঘাতে আন্দোলিত হয় গোটা দেশ। সন্দেশখালি হয়ে ওঠে রাজনীতির ‘হট টপিক’। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, সোমবার দিনভর সন্দেশখালি ঘিরে কলকাতা থেকে দিল্লি— কী কী হল।
মণিপুর-সন্দেশখালি তুলনায় নারাজ সুপ্রিম কোর্ট
সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের আর্জি শুনল না সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারীকে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিল তারা। আবেদনকারীর আর্জি ছিল, গত বছর মণিপুরে হিংসার ঘটনায় যে ভাবে তদন্ত হয়েছিল, সন্দেশখালিতেও সেই ভাবেই তদন্ত হোক। সেই আর্জিতে সায় দিল না শীর্ষ আদালত। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, মণিপুরের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা হয় না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে রাজ্য সরকার স্বাগত জানিয়েছে। আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘দেশের শীর্ষ আদালত যথাযথ ভাবেই বলেছে, মণিপুরের সঙ্গে কোনও ভাবেই বাংলার তুলনা হয় না। মামলাকারীর তরফে আবেদন করা হয়েছিল, সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তভার সিবিআই অথবা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-কে দেওয়া হোক। পাশাপাশি, গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া বাংলার বাইরে পাঠানো হোক। সুপ্রিম কোর্ট সেটাও খারিজ করে দিয়ে মামলা কলকাতা হাই কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালত প্রশাসনের ভূমিকা পর্যালোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।’’ আলাখ অলোক শ্রীবাস্তব নামে এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সন্দেশখালি থেকে যে সব ‘ভয়াবহ’ তথ্য উঠে এসেছে, তাতে বাংলায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া সম্ভব নয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা রাজ্যের বাইরে সরিয়ে আনা উচিত। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিট বা সিবিআই দিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি বলেও দাবি করেছিলেন মামলাকারী।
সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারায় স্থগিতাদেশ হাই কোর্টের
সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সোমবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। প্রসঙ্গত, ১৪৪ ধারাকে ঢাল করে তাঁকে সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন শুভেন্দু। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি চন্দের এজলাসে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি)-র রিপোর্ট বিচারপতির সামনে তুলে ধরেন। দাবি করেন, শুভেন্দু সন্দেশখালি গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। আইবির রিপোর্ট প্রকাশ করা যায় না। তাই পুরো রিপোর্ট পড়া হয়নি আদালতে। এর পরেই কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলের কাছে বিচারপতি চন্দ জানতে চান, তাঁদের কোনও আপত্তি রয়েছে কি না। কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল জানান, এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। কোনও নির্দেশ নেই। এ নিয়ে রাজ্য সওয়াল করে বলে, সারা জীবনে সন্দেশখালি যাননি, শুধুমাত্র ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে বলে সেখানে তাঁকে যেতেই হবে? বিচারপতি এই প্রসঙ্গে রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আদালত আগে যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার কী হল ? আদালতের নির্দেশ বিবেচনা করে দেখেছিল প্রশাসন ? যেদিন ১৪৪ ধারা বাতিল করা হল, সে দিনই আবার ১৪৪ ধারা জারি করা হল! আদালতের নির্দেশের কী গুরুত্ব থাকল ?’’ এর পরেই বিচারপতির মন্তব্য, ১৪৪ ধারা জারি করে কোনও ব্যক্তিকে কোনও এলাকায় প্রবেশ করা থেকে আটকানো যায় না।
আদালতের অনুমতি, যাচ্ছেন শুভেন্দু
সিপিএমের দায়ের করা মামলায় সন্দেশখালি থেকে ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ খারিজের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। তার পর সন্দেশখালির পাঁচ জায়গা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে প্রশাসন। শুভেন্দুর অভিযোগ, তার পরেও তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ জানিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। বিচারপতি চন্দ সেই মামলা দায়েরের অনুমতি দেন। তার শুনানিতেই সোমবার বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যে সব এলাকা থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেখানে যেতে পারেন শুভেন্দু। সন্দেশখালির নির্দিষ্ট কোন জায়গায় যেতে চান বিরোধী দলনেতা, বিকেল ৩টের মধ্যে জানানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। পরের শুনানিতে সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। এর পরেই আদালতকে ধন্যবাদ দিয়ে বিরোধী দলনেতা জানিয়ে দেন, তিনি মঙ্গলবারই সন্দেশখালি যাবেন। সঙ্গে থাকবেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, তাপসী মণ্ডল, বিশাল লামা প্রমুখ।
সন্দেশখালি মামলার শুনানি হাই কোর্টে
সন্দেশখালির ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় মূলত দু’টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়। প্রথমত, আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, সেখানকার মহিলাদের মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে ধর্ষণ করার মতো গুরুতর অভিযোগ। এ নিয়ে আজ হাই কোর্টে শুনানি রয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত এই মামলায় রাজ্য পুলিশের আইজি, বারাসাত রেঞ্জের ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে নোটিস দিয়েছিল আদালত।
রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে সওয়াল রেখার
রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন মহিলাদের উপর নির্যাতন হয়েছে। ১৮টা অভিযোগ পেয়েছি। দু’জন ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছে। পুলিশের উপর মানুষের আস্থা নেই। আমাকে ধরে গ্রামের মহিলারা কাঁদছেন। রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’ এর আগে জাতীয় তফসিলি কমিশনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সুপারিশ করে। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে ওই সুপারিশ করেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি গিয়েছিল জাতীয় তফসিলি কমিশনের প্রতিনিধি দল। সেখানে ওই প্রতিনিধি দলকে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন অরুণ। সেখান থেকে ফিরে শুক্রবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ এবং অন্য প্রতিনিধিরা। সেখানেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সুপারিশ জানানো হয়। সোমবার রেখা সন্দেশখালিতে ঘুরে ঘুরে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। টোটোয় চেপে পৌঁছে যান সন্দেশখালি থানাতেও। সঙ্গে স্থানীয় চার মহিলা। এ দিকে, রেখার এই সফরকে নিয়েও রাজনীতি চলছে। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যেমন রেখাকে অভিযোগ জানিয়েছেন, তেমনই রেখারা চোপড়ায় কেন যাচ্ছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
সাহায্য দিয়ে সমর্থন ‘কিনছে’ তৃণমূল?
তৃণমূল টাকা পাইয়ে দিচ্ছে। সমর্থন করবেন তো? একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইন অবশ্য ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি। ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, সমর্থনের বিনিময়ে এক মহিলাকে সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছেন আর এক মহিলা। দাবি, যিনি সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছেন, তিনি তৃণমূলের এক নেত্রী। তাঁর নাম দীপিকা পোদ্দার। তিনি সন্দেশখালির পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। তিনি যে মহিলাকে টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলছেন, তিনি সন্দেশখালির বাসিন্দা। উত্তম-শিবুরা যাঁদের জমির লিজ়ের টাকা দেননি বলে অভিযোগ, তাঁদের পাওনা টাকা মেটাতে শুরু করেছে তৃণমূল। তার জন্য বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন শাসকদলের প্রতিনিধিরা। অভিযোগ, তাঁরাই ভোটে সমর্থনের বিনিময়ে সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছেন। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো ঘিরে অভিযোগ, তৃণমূলের ওই নেত্রী দীপিকা সন্দেশখালির এক মহিলার বাড়ি গিয়ে বলছেন, ‘‘আপনাকে তো টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। আপনি তৃণমূলকে সমর্থন করবেন তো?’’ এ বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা বসিরহাটে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজিত বসু বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। জেনেই যা বলার বলব। না জেনে কিছু বলতে পারব না।’’
সংসদীয় তলবে ‘সুপ্রিম’ স্থগিতাদেশ
সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপর হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক-সহ পাঁচ প্রশাসনিক কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি (প্রিভিলেজ কমিটি)। তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংসদীয় কমিটির তলবের বিরুদ্ধে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যসচিব। সোমবার বিষয়টিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তার পরেই স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালত। রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশে এই তলব করা হয়েছিল। যে অভিযোগে মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ আমলা ও পুলিশকর্তাদের তলব করা হয়েছিল, তার কোনও সারবত্তা নেই। পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে, গত ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি বসিরহাটে যা যা ঘটেছিল, তার যে সব ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সাংসদের (সুকান্ত) ভূমিকার বিষয়টি আড়াল করা হয়েছে। সেখানে পুলিশের উর্দি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে, মহিলা পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে, এমনকি, গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy