বিক্রির জন্য গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে সবুজসাথীর সাইকেল। ফাইল চিত্র।
ভাঙা লোহা-লক্কড়ের স্তূপে পড়ে আছে বেশ কয়েকটা নীল রঙের ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল। শুধু একটা দোকানে নয়।
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে কয়েকটা ভাঙা লোহা-লক্কড়ের দোকানে (স্থানীয় পরিভাষায় ‘ভাঙরির দোকান’) ইদানীং দেখা মিলছে ভাঙাচোরা বা বাতিল ‘সবুজ সাথী’ সাইকেলের। এক-আধটা নয়, অনেক। যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও শাসক দলের নেতা বা প্রশাসনের কর্তারা তা মানতে নারাজ।
স্কুলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পে সাইকেল দেয়। বেশ কিছু দিন ধরে কৃষ্ণগঞ্জের খারবাগান ও বিদ্যুৎ দফতরের অফিসের উল্টো দিকে দু’টি ভাঙরির দোকানে নীল রঙের ‘সবুজ সাথী’ সাইকেলের স্তূপ দেখছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, যে ফেরিওয়ালারা গ্রামে-গ্রামে লোহা-লক্কড় কিনে বেড়ান, তাঁরাই কিছু দিন ধরে ‘সবুজ সাথী’-র সাইকেল নিয়ে এসে ভাঙরির দোকানে বিক্রি করছেন।
এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “ফেরিওয়ালাদের কাছে শুনছি, অনেকেই নাকি সরকারের দেওয়া সাইকেল ওজন দরে বিক্রি করে দিচ্ছে। কারণ সেই সব সাইকেল অত্যন্ত নিম্ন মানের।” প্রথম থেকেই ‘সবুজ সাথী’ সাইকেলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল বিরোধীরা। পড়ুয়াদের একাংশেরও দাবি, ব্যবহারের আগে ওই সাইকেল সারাই করতেই অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। কিছু সাইকেলে যন্ত্রাংশ ঠিক ভাবে লাগানো নেই বলেও অভিযোগ।
খারবাগান এলাকার ভাঙরির দোকানের মালিক খলিল দফাদার সোজাসুজিই বলেন, “ফেরিওয়ালারা তো বলছে, সাইকেল ভাল না হওয়ায় অনেকেই বিক্রি করে দিচ্ছে। তারা মাত্র ১৫০ টাকায় সাইকেল কিনে আনছে। আমরা ওদের সাইকেল-পিছু ২৪০-২৫০ টাকা দিচ্ছি।” তাঁর ব্যাখ্যা, সাইকেলগুলির ওজন প্রায় ১২ কেজি। তাঁরা ফেরিওয়ালাদের ২০ টাকা কেজি দরে দাম দিচ্ছেন।
ভাঙরির দোকান সেই সব সাইকেল কিনে কী করছে? খলিল বলেন, “সাইকেলগুলো ছোট-ছোট টুকরো করে অন্য লোহা-লক্কড়ের সঙ্গে বিক্রি করে দিচ্ছি। আমাদের লাভ খুব বেশি হলে ৩০-৩৫ টাকা।” কৃষ্ণগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক আশিস বিশ্বাসের দাবি, “আমরা প্রথম থেকেই বলছি, ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল অতি নিম্ন মানের। বাধ্য হয়েই পড়ুয়ারা সেগুলি ওজন দরে বিক্রি করে দিচ্ছে। ওই সাইকেল রাখা মানে হাতি পোষা।”
তবে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ন্ত্রিত কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক হালদারের পাল্টা দাবি, “এ বিজেপির অপপ্রচার। খোঁজ নিয়েও এমন ঘটনার সন্ধান পাইনি।” কৃষ্ণগঞ্জের বিডিও কামালউদ্দিন আহমেদও বলেন, “কেউ কেউ ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল নিয়ে অপপ্রচার করতে চেয়েছিল। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, কেউ ‘সবুজ সাথী’ সাইকেল বিক্রি করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy