Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Hotel

Sabir's Hotel: অতিমারিতে বন্ধ, রেজ়ালা-খ্যাত সাবির ‘ফিরবে’

অতিমারির দিনে সাবিরের সেই মাটন রেজ়ালার ঝাঁপও সাময়িক ভাবে বন্ধ। তার ফিরে আসা নিয়ে নানা গুজব।

— ছবি সংগৃহীত

— ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩২
Share: Save:

বয়সে প্রায় সদ্য স্বাধীন দেশের সমসাময়িক। স্বাদে স্বাস্থ্যে সেই রাজসিক মাংসের ঝোলের কৌলিন্য ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ও এক বাক্যে মেনে নিতেন।

১৯৫৫-য় কলকাতায় সোভিয়েট নেতা ক্রুশ্চেভ-বুলগানিনদের আপ্যায়নেও তাই চাঁদনি চকের সাবির হোটেলের হেঁশেল-শিল্পী ইব্রাহিম-আব্দুল গনিদের ডাক পড়েছিল রাজভবনে। হলদেটে সাদা ঝোলে ভাসমান সেই মাংসখণ্ড তখন থেকেই কলকাতার অন্যতম সাংস্কৃতিক প্রতীক।

অতিমারির দিনে সাবিরের সেই মাটন রেজ়ালার ঝাঁপও সাময়িক ভাবে বন্ধ। তার ফিরে আসা নিয়ে নানা গুজব। তবে সাবিরের দুই কর্ণধার কাকা-ভাইপো আসাদ জামাল এবং ফুজ়েল জামাল জোর গলায় বলছেন, এই মুহূর্তে কিছু সমস্যা চললেও সাবিরের ঝাঁপ খুলবে অচিরেই। ইন্টারনেটে কেউ কেউ সাবিরের নামের পাশে ‘চিরতরে বন্ধ’ লিখে দিলেও এর প্রতিবাদে সরব ফুজ়েল-আসাদরা। ফুজ়েলের বাবা সাবিরের সাবেক কর্তা শাহিদ জামাল গত হয়েছেন ২০১৭-য়। মধ্য তিরিশের ফুজ়েল সদ্য দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার সামলে উঠেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘রেস্তরাঁর ব্যবসার বিভিন্ন শরিকের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতভেদ আছে। আমি অসুস্থ হওয়ার দরুন কিছু কাগজে সই করতেও পারছি না। তবে এই সমস্যা কাটিয়ে সাবির শিগগিরই খুলবে।’’ আসাদ সাহেব এখন লখনউয়ের কাছে দরিয়াগঞ্জে, তাঁদের পরিবারের সাবেক ঠিকানায়। তিনি বলছেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের গিরিডি বা বিহারের গয়ায় পুরনো কর্মচারীরা ডাকলেই কাজে যোগ দেবেন। কোনও সমস্যা হবে না।’’

১৯৪৭-এ সাবিরের পথ চলা শুরু। প্রাণপুরুষ হাজি সাবির আলি তখন সদ্য ইরান ঘুরে এসেছেন। রেজ়ালা পদটি সেখানেই তাঁর মনে ধরেছিল। উত্তরপ্রদেশে সাবির সাহেবের দেশোয়ালি ভাই ইব্রাহিমের হাতেই ক্রমশ আধার পায় মাটন রেজ়ালা। এর পরে এতগুলো দশক গড়িয়ে গিয়েছে। বিরিয়ানি-কবাবে সাবিরের প্রতিযোগীর অভাব হয়নি কলকাতায়। তবে রেজ়ালা ও সাবির যেন সমার্থক। রেস্তরাঁর অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার নাসিম আখতার বলছিলেন, ‘‘রেস্তরাঁর কারবার সব সময়ে সমান তালে চলেছে, তা নয়! কিন্তু রেজ়ালার জন্য খাসির ‘অগলাদস্ত’ বা সামনের পায়ের উপরের দিকে পাঁজরা-ঘেঁষা মাংসের টুকরোয় আপস করা হয়নি।’’ কখনও দিনে ৪০০ কেজি মাংসেরও কারবার চলেছে। রোজ সাত-সকালে বেকবাগানের বাঁধা দোকান থেকে মাংস আসার পরে রেজ়ালা নামতে নামতে বেলা দেড়টা, দু’টো। রসিকজন দোকানে হাজির হয়ে নিঃশব্দে মাহেন্দ্র ক্ষণের অপেক্ষায় থেকেছেন। সাবেক ওস্তাদদের থেকে শিখে তরুণ বাবুর্চি হায়দর ওরফে কল্লু এখন রেজ়ালার জাত বজায় রেখেছেন।

এর বাইরে শাহি টুকরা মেলে সকালের দিকে। আর সাবিরের সাদা ফিরনি অনেকটা দিল্লির করিমসের ধাঁচের। লাল দই এবং সাদা দইয়ের মতো কলকাতার ফিরনিতেও লাল এবং সাদা— দু’টি গোত্র। সাবির এত বছর ধরে সাদা ফিরনির পরম্পরা মেলে ধরেছে। সাবিরের সমসাময়িক বা কিছু দিন আগের রেস্তরাঁ সিরাজ় বা আমিনিয়া শহরে অজস্র শাখা খুলেছে। সাবিরকর্তারা নিজেদের সাবেক ঠিকানায় বাঁধাধরা কয়েকটি পদে উৎকর্ষ অর্জনে বিশ্বাসী। আপাতত সব গুজব উড়িয়ে রেজ়ালা নিয়ে ফেরার তোড়জোড় করছেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Hotel Mutton Rezala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy