সাবির মোল্লা এবং কাঞ্চন গড়াই
ওঁরা নিখোঁজ। রাজ্যের মাওবাদী-পর্বে। ১০ বছরের বেশি। ঠিক যে-যে শর্ত পূরণ করলে, সরকারি ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি মিলবে বলে মঙ্গলবার খড়্গপুর গ্রামীণের প্রশাসনিক সভায় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বর্ধমানের সাবির মোল্লা এবং বাঁকুড়ার কাঞ্চন গড়াইয়ের পরিবার রয়েছে আরও কিছু উত্তরের অপেক্ষায়। পরিবারের ছেলেদের ঠিক কী হয়েছে— যাদের অন্যতম।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাওবাদী পর্বে জঙ্গলমহলের অনেকে আজও নিখোঁজ। এ রকম যাঁরা ১০ বছর নিখোঁজ হয়ে রয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে রাজ্য সরকার চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের এক জনকে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেবে।’’
২০০৯-এর ৩০ জুলাই বর্তমান ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের ধরমপুর ক্যাম্পের পথে নিখোঁজ হন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের দুই কনস্টেবল—পূর্ব বর্ধমানের মেমারির তেলসরাই গ্রামের সাবির ও বাঁকুড়ার ছাতনার সুয়ারবাকড়া গ্রামের কাঞ্চন। পরে মাওবাদী নেতা বিকাশ দাবি করেন, ওই দুই পুলিশকর্মী ‘জনরোষের শিকার’। যদিও তাঁদের দেহ, দেহাবশেষ বা কঙ্কাল মেলেনি।
আরও পড়ুন: চাকরি মাওবাদী হানায় নিরুদ্দেশের পরিবারকে
২০১১ সালে ধরমপুরে মাটি খুঁড়ে কিছু হাড়গোড় মেলে। সেগুলি সাবির-কাঞ্চনের কি না, তা জানতে তাঁদের পরিবারকে ডেকে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট আজও পাননি বলে আক্ষেপ কাঞ্চনের বাবা বাসুদেব গড়াই ও সাবিরের ‘মেজদা’ সামাদ আলি মোল্লার। তাঁদের দাবি, পুলিশ ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ও দেয়নি। বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে কাঞ্চনের আমানত তোলা যাচ্ছে না। ওর বেতন হিসেবে যা দেওয়া হচ্ছে, তা-ও ন্যায্য নয়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও এক ছেলে চাকরি পেলে সংসারের উপকার হয়।’’
সাবির নিখোঁজ হওয়ার সাত বছরের মাথায় তাঁর এক ভাই সফিক পুলিশে চাকরি পেয়েছেন বলে জানান সামাদ। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের ঘোষণা ভাল। কিন্তু সাবির জীবিত নাকি মৃত, তা জানালে আরও ভাল হত। ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা থেকে শুরু করে পারিবারিক অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারতাম।’’
‘মাওবাদী হানায় শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারের যৌথ মঞ্চ’-এর সম্পাদক শুভঙ্কর মণ্ডলের মতে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ২০১২ সালেই বেলপাহাড়িতে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড-সহ আমাদের ১২ দফা দাবি রয়েছে। সেই সব পূরণ হলে বুঝব, রাজ্য সরকার সত্যিই স্বজনহারা পরিবারগুলোর পাশে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy