আদর: সাফল্যের সুখবর শোনার পরে দিদিমার সঙ্গে রুমানা সুলতানা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
মা নিজেই বলেন, তাঁর মেয়ে নাকি বেশ রাগী। তার উপরে, ইচ্ছে হলেই সেই কিশোরী পড়াশোনা করে, না-হলে করে না।
মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সেই রুমানা সুলতানা এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। পাঁচশোয় পাঁচশো পায়নি। পেয়েছে ৪৯৯। তবে রুমানার বেশি আক্ষেপ, পরীক্ষা না হওয়ায়। রুমানার বক্তব্য, “প্রথম-দ্বিতীয় হওয়ার ভাবনা মাথায় ছিল না, চিন্তা ছিল ভাল ফল হবে কি না। ফল ভাল হল, কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে এই নম্বর পেলে বেশি ভাল লাগত।’’
২০১৯ সালের মাধ্যমিকে ৬৮৭ নম্বর পেয়ে পঞ্চম হয়েছিল রুমানা। তবে উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে যে মেয়ের বেশ উদ্বেগ ছিল, তা-ও জানাচ্ছেন বাড়ির লোক। এ বার রুমানার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া, গবেষণাও করা। সেই স্বপ্ন নিয়েই দেবে মেডিক্যালে ভর্তির বিভিন্ন পরীক্ষা।
রুমানাদের বাড়ি কান্দির পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের হোটেলপাড়ায়। বাবা রবিউল আলম ও মা সুলতানা পারভিন দু’জনে হাই স্কুলের শিক্ষক। তাই বাড়িতে পড়াশোনার চর্চা ছিলই। আর মা বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই বইখাতা নিয়ে কিছু না কিছু করতেই থাকত রুমানা। তবে মেয়ের আমার বেশ রাগ রয়েছে তো। ইচ্ছে হলে পড়াশোনা করে, না হলে পড়তেই বসে না। তাই ভাবছিলাম, রেজ়াল্ট কতটা ভাল হবে।”
প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য রুমানার আলাদা গৃহশিক্ষক ছিলেন। তবে করোনার আতঙ্ক বেড়ে যাওয়ার পরে শুধু অঙ্কের শিক্ষক আসতেন। বাবা ও মা দু’জনেই ইংরেজির শিক্ষক, তাঁদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছে কন্যা। রুমানা বলেন, “বাবা ও মা আমার জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন, তাই হয়তো আজকে ভাল ফল করতে পেরেছি। দিদিমাও আমার বড় সঙ্গী। ওর কাছে তো আমার নানা আবদার।”
বাবা রবিউল আলম বলেন, “মুর্শিদাবাদ পিছিয়ে পড়া জেলা। সেখানে আমার মেয়ে যে পর পর ভাল ফল করল, সর্বোচ্চ নম্বর পেল, তাতে আমরা খুব খুশি।’’ তবে পড়াশোনা নিয়ে মেয়ের অতিরিক্ত ছটফটানিতে চিন্তিতও। বলেন, ‘‘মেয়েকে আমরা চাপ দিই না। ও নিজে কিন্তু চাপ নেয়। ঘুম হয় না বলে ডাক্তার ওষুধও দিয়েছেন। আশা করি, মেয়ের স্বপ্ন এ বার পূর্ণ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy