Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sisir Adhikari

বিজেপির হিরণ, রুদ্রের সঙ্গে পুজো উদ্বোধন, পদ্ম-পত্রে শিশির নিয়ে ফের কটাক্ষ তৃণমূলের

নান্দনিকের পুজো কাঁথির অন্যতম জনপ্রিয়। ওই ক্লাবের সভাপতি শিশির অধিকারীর ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু। ওই পুজোর উদ্বোধনে ছিলেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ এবং শিশির অধিকারী।

বাঁ দিক থেকে রুদ্রনীল ঘোষ, হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির অধিকারী।

বাঁ দিক থেকে রুদ্রনীল ঘোষ, হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:৩৪
Share: Save:

তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতেই তাঁকে ইদানীং দেখা যায় না। এমনকি, দলের নির্দেশ না-মেনে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন শিশির অধিকারী। তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল। সেই আবহে ‘অসুস্থ’ তৃণমূল সাংসদকে বৃহস্পতিবার একই মঞ্চে দেখা গেল এক বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে। শুধু বিধায়ক নন, ওই মঞ্চে ছিলেন বিজেপির এক নেতাও। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, শিশির এখন মনেপ্রাণে বিজেপি। আর গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, শাসকদল পুজোর মধ্যেও রাজনীতি খুঁজে বেড়াচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শিশিরের প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।

চতুর্থীর সন্ধ্যায় কাঁথির ‘নান্দনিক’ ক্লাবের পুজো উদ্বোধনে অতিথি ছিলেন অভিনেতা এবং বিজেপিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। ওই মঞ্চেই দেখা যায় কাঁথির সাংসদ শিশিরকে। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘শিশিরবাবু খাতায়কলমে ঘাসফুলের হলেও অনেক দিন ধরেই মনেপ্রাণে বিজেপি। বিজেপির সঙ্গেই মঞ্চে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসেন। সে কারণেই ওঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সরব হয়েছি আমরা।’’

নান্দনিকের পুজো কাঁথিতে জনপ্রিয়তায় অন্যতম। ওই ক্লাবের সভাপতি শিশির অধিকারীর ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু। ওই ক্লাবের ৪৩তম বর্ষের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে এ বার হাজির ছিলেন একঝাঁক বিজেপি নেতা। রুদ্রনীল, হিরণ, শিশির ছাড়াও ওই মঞ্চে ছিলেন দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস, বিজেপি নেতা সুদাম পণ্ডিত, সোমনাথ রায়, চন্দ্রশেখর মণ্ডল, বনশ্রী মাইতি, ধীরেন্দ্রনাথ পাত্রও। এ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন কাঁথির তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস এ নিয়ে বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলছি, শিশির অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হলেও বরাবরই তিনি বিজেপির ঘনিষ্ঠ। এই কারণেই তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সংসদে আবেদন জানানো হয়েছে। চতুর্থীর দৃশ্য আবারও প্রমাণ করল যে তিনি বিজেপির ঘরের লোক।” অভিজিতের আরও দাবি, “জনগণের কাছ থেকে চাঁদা তুলে পুজো হলেও ওখানে বিজেপির নেতানেত্রীদেরই দেখা যায়। ওখানে তৃণমূলের কেউ যান না।”

বিজেপি যদিও এর মধ্যে ‘অন্যায়’ কিছু দেখছে না। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বাঙালির দেবীপক্ষ শুরু হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়া দিয়ে। দুর্গাপুজোর সময় সমস্ত ব্যবধান ভুলে গিয়ে সবাই একাত্ম হয়ে পুজোমণ্ডপে যান। যে রাজনৈতিক দল অসহিষ্ণু তারাই রাজনৈতিক অস্পৃশ্যতায় বিশ্বাস করেন। তৃণমূলের কাছ থেকে বিভাজনের রাজনীতি শিখতে আমরা নারাজ।’’

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিশিরের ছেলে শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে থেকেই কাঁথির অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। তৃণমূল বনাম কাঁথির অধিকারী পরিবারের বাগ্‌যুদ্ধে বার বার সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।

আরও পড়ুন:

অন্য দিকে, শিশিরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁকে অমিত শাহের সভায় দেখা গেলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। এর মধ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের আবেদন করেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক দিন আগে এ বিষয়ে শিশিরকে লোকসভায় তলব করেছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। কিন্তু ‘অসুস্থতা’র কারণে তিনি দিল্লি যাননি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy