তারা যদি এখনও বদমাইশি না থামান, তা হলে তো মুশকিল।’’ রূপা এ-ও জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য বিজেপির কোনও পদেই তিনি নেই। এই ‘দূরত্ব’ যে এখনও ঘোচেনি, বরং বেড়েছে দিনে দিনে, তা আরও স্পষ্ট হল শনিবারের পোস্টে।
ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাংলা সফরকালে কাশীপুরে বিজেপির যুব নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। এ বার ওই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ফেসবুক পোস্টে তাঁর প্রশ্ন, ‘অর্জুনকে কি খুন করা হয়েছে? না কি আত্মহত্যা? যদি তাই হয়, তা হলে সুইসাইড নোট কোথায়?’ অর্জুনের এই মৃত্যুর সঙ্গে তিনি ২০১৭ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে বিজেপি নেতা সৌমিত্র ঘোষালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন। পাশাপাশি রূপার আবেদন, অর্জুনের মৃত্যু নিয়ে তাঁর বক্তব্যকে যেন কোনও রাজনৈতিক দলের মতামতের সঙ্গে না মিলিয়ে দেখা হয়।
শনিবার রাতে নিজের ডায়েরির পাতার একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন রূপা। ওই পাতায় অর্জুনের রহস্য-মৃত্যু নিয়ে কিছু কথা লেখা রয়েছে। সঙ্গে একাধিক প্রশ্নও। ছবির বিররণীতে রূপা লেখেন, ‘অর্জুন সম্পর্কে আমার মতামত... আমি ওঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। উনি পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক। ওঁর রাজনৈতিক পরিচয় দূরে রাখা হোক।’ এর পরে রাজ্যসভায় বিজেপির প্রাক্তন সাংসদের প্রশ্ন, ‘খুন?’ ডায়েরির পাতাতেও রূপার প্রশ্ন, ‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে সেজেগুজে কেন কেউ আত্মহত্যা করবেন?’
অর্জুনের মৃত্যুর পর তাঁকে নিজের দলের কর্মী বলে দাবি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষ। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রূপা। অর্জুনকে তৃণমূল নেতা ধরে নিয়েই রূপা লিখেছেন, ‘আত্মহত্যার জন্য মমতার সরকারের এক বছর— নতুন সরকারের পালনের দিন বেছে নিলেন?’
অতীন দাবি করেছিলেন, অর্জুনের পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু তার কারণ কী হতে পারে? ডায়েরির পাতায় রূপার প্রশ্ন, ‘দুঃখ? কারণ? সুইসাইড নোট?’
এর পরেই রূপা লেখেন, ‘এই গোটা ঘটনা দেখে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বারুইপুরে সৌমিত্র ঘোষালের মৃত্যুর ঘটনা মনে পড়ছে।’ শেষে লেখা, ‘ইক্যুয়েশন (রাজনৈতিক সমীকরণ)— বিজেপি কর্মীদের মনোবল ভেঙে দাও।’ প্রসঙ্গত, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই সৌমিত্রকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে সেই সময় দাবি করেছিল বিজেপি। খুন করার পর তাঁর দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর বারুইপুরে পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন রূপা।
অর্জুনের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি ওই ফেসবুক পোস্টে রূপার লেখা শেষ বাক্য নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার মতামতের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের মতামত মেলাবেন না।’
বস্তুত, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ‘মাঠেঘাটে নেমে রাজনীতি’ থেকে দূরে রয়েছেন রূপা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গেও তৈরি হয়েছে দূরত্ব। সম্প্রতি রূপার বেশ কিছু মন্তব্যে তা স্পষ্ট হয়েছে। কলকাতা পুরভোটের সময় নাম করেই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের নিন্দা করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সভাপতি নতুন এসেছেন, তিনি অনেক কিছুই চিনে, বুঝে উঠতে পারেননি। দিলীপবাবুর পুরো টিমটা রয়েছে। তারা যদি এখনও বদমাইশি না থামান, তা হলে তো মুশকিল।’’ রূপা এ-ও জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্য বিজেপির কোনও পদেই তিনি নেই। এই ‘দূরত্ব’ যে এখনও ঘোচেনি, বরং বেড়েছে দিনে দিনে, তা আরও স্পষ্ট হল শনিবারের পোস্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy