ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন জখম দেবলীনা সিংহ ও সহযাত্রী সঞ্জয় ঘোষ। শনিবার মালদহ টাউন স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
রাত দু’টো কুড়ি। সবে নওয়াদার ঢাল স্টেশন পেরিয়েছে মালদহগামী গৌড় এক্সপ্রেস। হঠাৎ বাতানুকূল টু টিয়ার এ-২ ও এ-৩ কামরায় এক দল দুষ্কৃতী চড়াও হয়। তারা যাত্রীদের ব্যাগপত্র লুটপাট শুরু করে। সেই সময়ে তাদের বাধা দিতে যান দুই মহিলা যাত্রী রিচা জিহান ও দেবলীনা সিংহ। এর মধ্যে রিচা এক বিএসএফ আধিকারিকের স্ত্রী। দুষ্কৃতীরা তাঁদেরও মারধর করে ব্যাগ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয়। পরের স্টেশন গুসকরার আগে চেন টেনে দুষ্কৃতীরা ট্রেন থেকে নেমে যায়। যাত্রীরা প্রথমে সাঁইথিয়ায় পরে মালদহ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
মাত্র সাত দিন আগেই গৌড় এক্সপ্রেসের একটি সংরক্ষিত কামরায় এক কলেজ ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ করে এক মদ্যপ যুবক। সে দিন যাত্রীরা সকলে মিলে রুখে দাঁড়িয়ে মদ্যপ যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেন। শুক্রবার ওই নিগৃহীত যাত্রীদের অভিযোগ, কুড়ি মিনিট ধরে লুটপাট চললেও রেলের কোনও পুলিশ আসেননি। তাঁদের পাশের বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির কামরায় ছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তার পরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত ঢিলেঢালা কেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। খগেনকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মেনে নেন, যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা উচিত, তা ট্রেনে ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘গৌড় এক্সপ্রেসে নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন। বিষয়টি রেল মন্ত্রকে জানাব।’’ দিল্লি থেকে রেল মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, গৌড় এক্সপ্রেসে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। সন্দেহভাজনদের স্কেচ তৈরি করা এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলাও হবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ট্রেনে এক জন এসআই এবং পাঁচ জন কনস্টেবল ছিলেন। রেল পুলিশেরই একটি অংশের কথায়, ট্রেনে বাতানুকূল শ্রেণিগুলি মিলিয়ে আঠারোটির মতো সংরক্ষিত কামরা থাকে। এতগুলি কামরার জন্য ছ’জন পুলিশ যথেষ্ট নয়। গৌড় এক্সপ্রেসের বাতানুকূল টু-টিয়ার কামরায় বছরখানেক আগেই ব্যাগ চুরি হয়েছে। সম্প্রতি একটি সংরক্ষিত কামরায় এক ছাত্রীকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। তার পরেও দিল্লি থেকে রেল মন্ত্রকের দাবি, এই ট্রেনে সাম্প্রতিক সময়ে এ দিনের লুটপাটই বড় ঘটনা।
ট্রেনের যাত্রী রিচা বলেন, “আমরা কয়েক জন মিলে দু’জনকে হাতে-নাতে ধরেও ফেলেছিলাম। সেই সময় রেলের নিরাপত্তারক্ষীরা হাজির হলে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা যেত। কিন্তু তাঁরা সময়মতো না আসায় দুষ্কৃতীরা আমাদের মারধর করে পালিয়ে যায়।”
দায়িত্বপ্রাপ্ত টিকিট পরীক্ষক গৌতম রায়ের দাবি, ‘‘কিছু যাত্রী ধূমপান করার জন্য বাতানুকূল কামরায় দরজা খুলে দেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।” গৌড় এক্সপ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেল পুলিশ আধিকারিক মানস মণ্ডল বলেন, “খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছই। প্রথমে অন্য সংরক্ষিত কামরায় চলে যাই। পরে জানতে পেরে বাতানুকূল কামরায় যাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy