(বাঁ দিকে) রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ইনলাইন।
বাংলাদেশ আবহে ‘দলের’ বার্তা দিতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে বেছে নিল সিপিএম। আগামী ১৭ জানুয়ারি বসুর প্রয়াণদিবস। ওই দিন নিউটাউনে ‘জ্যোতি বসু সোশ্যাল স্টাডিজ় অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’-এর অংশবিশেষের উদ্বোধন করবেন পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক। ওই অনুষ্ঠানেই ‘বিশেষ অতিথি’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে। যিনি বাংলাদেশের নাগরিক।
কেন রেজওয়ানা? সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের জবাব, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দু’পারের বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও বিদ্যমান। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি ঐক্য বজায় থাক।’’ সিপিএম সূত্রে খবর, ওই অনুষ্ঠানে রেজওয়ানাকে ‘বিশেষ অতিথি’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি সঙ্গীত পরিবেশনও করবেন।
রেজওয়ানার জন্ম বাংলাদেশের রংপুরে। তিনি বাংলাদেশেরই নাগরিক। যদিও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ যোগ। বিশ্বভারতীর ছাত্রী ছিলেন তিনি। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্নেহধন্যা’ বলে পরিচিত ছিলেন। বিরোধী বিজেপি অবশ্য সিপিএমের কর্মসূচিতে রেজওয়ানাকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে তোপ দেগেছে। পদ্মশিবিরের নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভারতের বিরোধিতা করছে, গালমন্দ করছে। ওখান থেকেই শিল্পীদের আনতে হচ্ছে কেন? এখানে কি শিল্পী নেই? জানি না কমিউনিস্টদের বুদ্ধি কবে সোজা হবে!’’ বাংলাদেশ আবহে রেজওয়ানাকে নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কও হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার একটি পুরসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কথা ছিল রেজওয়ানার। ‘বাংলাদেশি শিল্পী’কে দিয়ে কেন গান গাওয়ানো হবে, সেই প্রশ্ন তুলে স্থানীয়দের একাংশ সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ শুরু করে। ‘চাপে’ পড়ে রেজওয়ানার নাম বাদ দেয় সেই পুরসভা। তবে সিপিএম রেজওয়ানাকে এনে দলের তরফে ‘রাজনৈতিক বার্তা’ই দিতে চাইছে। যদিও তা কতটা ‘সময়োপযোগী’ হচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠছে দলের অন্দরে। আবার পাশাপাশি দলেরই অনেকের বক্তব্য, সংস্কৃতির প্রশ্নে বামপন্থীদের ‘সঙ্কীর্ণতা’ দেখানোর অবকাশ নেই। তাই এই সিদ্ধান্ত সঠিক।
সিপিএমে এখন সম্মেলন পর্ব চলছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই এরিয়া সম্মেলন হয়ে গিয়ে জেলা সম্মেলন হচ্ছে। যেমন শনিবার থেকে শুরু কলকাতার জেলা সম্মেলন। সেই সম্মেলন পর্বে বহু জায়গায় প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ প্রশ্নে দল কেন নীরব? কেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগঠিত ভাবে পথে নামা যাচ্ছে না? সিপিএমের অনেকের বক্তব্য, এই ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’র কারণে হিন্দু ভোট আরও সরে যাবে দলের থেকে। সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আবহে দলের তরফে বার্তা দিতে রেজওয়ানাকে বিশেষ অতিথি করল সিপিএম। উল্লেখ্য, ১৭ জানুয়ারি দুপুর থেকেই নিউটাউনে শুরু হচ্ছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক। ওই বৈঠকেই আগামী এপ্রিলে তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রতিবেদনের খসড়া পেশ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy