ফাইল ছবি
পরীক্ষার নাম ‘গেট প্যাটার্ন’, চলনভঙ্গি পরীক্ষা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এক ব্যক্তির অনধিকার প্রবেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় অভিযুক্তের নিশ্চিত শনাক্তকরণের জন্য সেই পরীক্ষার সাহায্য নিতে চাইছেন তদন্তকারীরা। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকার অভিযোগে ধৃত হাফিজুল মোল্লার চলনভঙ্গি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়া ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম কোনও তদন্তকারী সংস্থা অভিযুক্তের নিশ্চিত শনাক্তকরণের জন্য এই পরীক্ষা করতে চাইছে বলে সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান।
তদন্তকারীরা জানান, বছরখানেক আগে হাফিজুলের খোঁজে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে তার বাড়ির এলাকায় রাজস্থান থেকেও পুলিশ এসেছিল। হাফিজুল সেই সময় বেপাত্তা হয়ে যায়। এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, রাজস্থান পুলিশ কেন হাফিজুলের খোঁজে বাংলায় এসেছিল, তা জানতে তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
হাফিজুলকে সোমবার আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে তোলা হয়। দু’দফায় মোট ১৪ দিন পুলিশি হাজতে রেখে হাফিজুলকে জেরা করার পরে এ দিন সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানান। বিচারক ধৃতকে ১ অগস্ট পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারি আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘হাফিজুল বৃহত্তম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জেল হেফাজতে থাকাকালীন ‘গেট প্যাটার্ন’ পরীক্ষার মাধ্যমে তার চলনভঙ্গি খতিয়ে দেখা হবে।’’ এই পরীক্ষার বিষয়ে সরকারি আইনজীবীর ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশপাশের এবং তাঁর কালীঘাটের বাড়ি থেকে নবান্ন পর্যন্ত গোটা রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে হাফিজুলের বিভিন্ন ছবি তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। গত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত কয়েক বার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আসা হাফিজুলের সেই সব ছবির সঙ্গে সশরীরে হাফিজুলের হাঁটাচলা এবং অঙ্গভঙ্গি মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হতে চায় পুলিশ। তাই এই পরীক্ষা।
এ দিন আদালতে পুলিশের দাবি, তাদের হেফাজতে থাকাকালীন হাসনাবাদে হাফিজুলের বাড়ির এলাকা ছাড়াও বসিরহাটের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। হাফিজুলের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে কমবেশি ৩০০ জনের। তদন্তকারীদের দাবি, দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। সেই জোড়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে দেখা গিয়েছে, খুন-ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন অভিযুক্ত এবং জাল নোটের কারবারিদের সঙ্গে হাফিজুলের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি এলাকার কিছু অপরাধীর সঙ্গে কথা হত তার। তদন্তকারীরা জানান, ওই অভিযুক্তের মোবাইল ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
হাফিজুলের আইনজীবী বিকাশ গুছাইত বলেন, ‘‘পুলিশ বিভিন্ন অপরাধীর সঙ্গে হাফিজুলের যোগাযোগের কথা বলছে, কিন্তু তাকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।’’
শনিবার আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের কাছে কলকাতা পুলিশের বটতলা থানা এক ডাকাতির মামলায় হাফিজুলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন জানিয়েছিল। বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন বলে আদালত সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy