তাপস মণ্ডল এবং কুন্তল ঘোষ। ফাইল চিত্র।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত তাপস মণ্ডল ‘কালীঘাটের কাকু’ বলে উল্লেখ করে তাঁর নামটি ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। জেরায় তাপসের দাবি ছিল, ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষই তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, কালীঘাটের এক কাকু ‘সব ব্যবস্থা’ করে দিচ্ছেন। তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছিলেন, সুজয় ভদ্র নামে এক ব্যক্তিকেই কুন্তল ‘কালীঘাটের কাকু’ বলতেন।
যাঁকে ‘কালীঘাটের কাকু’ বলা হচ্ছে, সেই সুজয় ভদ্র বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘‘আমার কর্মস্থল নিউ আলিপুর। ‘কালীঘাটের কাকু’ কথাটা কোথা থেকে এল, আমার পক্ষে তো সেটা বলা সম্ভব নয়। যাঁরা এটা বলছেন, তাঁরাই এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।’’ তবে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে অচিরেই সুজয়কে তলব করা হবে। সুজয়ের দাবি, তাঁর ‘সাহেব’, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ থেকে তিনি অভিষেকের অফিসে চাকরি করছেন। এ দিন বেহালার বাড়িতে বসে সুজয়ের দাবি, ‘‘পৃথিবীর কারও ক্ষমতা নেই আমার সাহেবকে ছোঁবে। কারণ তাঁর নাম কেউ করতে পারবে না। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে পারবে না, তাঁর সঙ্গে কেউ ফোনে কথা বলতে পারবে না। আমার কাছ অবধি এসে থেমে যেতে হচ্ছে।’’
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁর কাছে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলে জানান সুজয়। পাশাপাশি কাউকে চাকরি করিয়ে দেননি বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাইঝির ৪১ বছর বয়স। এমএ, বিএড। টেট দিয়েছে। তার চাকরি হয়নি। আমার একটি মাত্র মেয়ে ‘গ্রুপ সি’র কর্মী-পদে চাকরির জন্য এসএসসি-র পরীক্ষা দিয়েছিল, তার চাকরি হয়নি।’’
তাপস মণ্ডল এবং গোপাল দলপতিকে তিনি চেনেন না বলেও জানিয়েছেন সুজয়। তাঁর কথায়, ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিবিআই গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক। এর আগে কয়লা কাণ্ডে সিবিআই তাঁকে সাক্ষী হিসেবে ডেকেছিল বলে জানিয়েছেন সুজয়। তিনি জানান, ইডি-ও তাঁকে ডেকেছিল। কিন্তু সেই সময় তাঁর স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি যেতে পারেননি।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে কালীঘাটের কাকুর নাম উঠে এসেছে। যাঁর নাম উঠেছে, তিনি যে-কোম্পানির ডিরেক্টর, তার মালিকানার বড় অংশই হচ্ছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। এটা ভাল ইঙ্গিত নয়।”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘যাঁর নামে এত কথা হচ্ছে, তাঁর নিজের মেয়ে টেট পাশ করে চাকরি পাননি। তাঁর দাদার মেয়ে চাকরি পাননি। তবু উনি দুর্নীতিগ্রস্ত? কারও অফিসে চাকরি করাটা তো দুর্নীতি হতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy