মৌসুমি কয়াল। ছবি: সংগৃহীত।
কামদুনির আন্দোলনের সময় তাঁকে যে ভাবে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা করা হয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও সেই ভাবেই তাঁকে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা হচ্ছে। ধৃত কুন্তল ঘোষের মুখে তাঁর নাম নিয়ে বিতর্কের মধ্যে আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানালেন কামদুনির ‘প্রতিবাদী চরিত্র’ মৌসুমি কয়াল। মৌসুমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তাপস মণ্ডলের ‘এজেন্ট’ বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন কুন্তল। তারই প্রেক্ষিতে মৌসুমির বক্তব্য, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন ম়ঞ্চে যান বলেই তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে। সরাসরি শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা প্রচারের’ অভিযোগ তুলেছেন মৌসুমি।
মৌসুমির ওই অভিযোগমূলক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শাসক তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের তো খেয়েদেয়ে কাজ নেই, যে কারও বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে! এই নিয়ে দলের কোনও বক্তব্য নেই।’’ কুণালের আরও বক্তব্য, ‘‘যিনি (কুন্তল) বলেছেন, তিনি জানেন। যাঁর (মৌসুমি) সম্পর্কে বলেছেন, তিনিই জানেন। তৃণমূল এ সবের সঙ্গে যুক্ত নয়।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, মৌসুমি ওই মামলায় ধৃত তাপসের ‘এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। তবে তিনি কোনও টাকা তুলেছেন কি না, সেই ব্যাপারে কিছু বলেননি কুন্তল। তাঁর ওই মন্তব্যের পরেই মৌসুমির সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। মৌসুমি জানান, বেসরকারি বিএড-ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপসের অফিসে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় প্রজেক্ট’-এর কাজে ঢুকেছিলেন। সেখানে ‘রিসেপশনিস্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। মৌসুমির কথায়, ‘‘যাঁরা অফিসে আসতেন, তাঁদের নাম আর ফোন নম্বর লিখে রাখতাম।। প্রজেক্টের কাজের সূত্রে ফোন এলে ধরতাম। আমি কলেজের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তবে সেই কাজ বেশি দিন করিনি। ৮-৯ মাস বেতন না-পাওয়ায় কাজটা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’’
ঘটনাচক্রে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাপস গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছিল মৌসুমিকে। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার মতে, তাপস মণ্ডলকে আরও আগে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। অনেক দেরি হয়ে গেল।’’ মৌসুমি দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যই তাপসকে বিএড কলেজগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শুধু মানিক নন, দুর্নীতিকাণ্ডে আরও বড় বড় মাথা জড়িয়ে রয়েছেন বলেও দাবি করেছিলেন মৌসুমি। এ বার তাপসের ‘এজেন্ট’ হিসাবে তাঁর নাম উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা তৈরি হয়েছে।
মৌসুমির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমি যখন কামদুনির আন্দোলন শুরু করেছিলাম, তখন আমায় নানা ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাকে এ-ও বলা হয়েছিল, আন্দোলন করে কী করবেন! তার চেয়ে চাকরি নিন, টাকা নিন। এখনও একই ভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবারেও ডিএ-র আন্দোলনমঞ্চে যাচ্ছি। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনমঞ্চে যাচ্ছি। এটা তৃণমূল মেনে নিতে পারছে না। তাই আমার নামে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।’’
মৌসুমি আরও জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ইডি, সিবিআই ডাকলে অবশ্যই যাব। তদন্তে তো সাহায্য করতেই হবে। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে! আমি যাতে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত না হতে পারি, সেই জন্যই আমায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy