পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং কুণাল ঘোষ নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে একাধিক বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। ফাইল ছবি।
আদালতে ঢোকার মুখে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির তিন নেতার নাম করেছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা হলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের নাম করে যে অভিযোগ পার্থ তুলেছেন, ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পার্থের বক্তব্যের ১৮ মিনিট আগে সেই নামগুলিই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের টুইটে। তবে সেই টুইটে ছিল বিজেপির আরও এক নেতার নাম। যে নাম পার্থের মুখে শোনা যায়নি।
এ কি সমাপতন? কাকতালীয়? তৃণমূলের অন্দরের সমীকরণে পার্থ-কুণাল সম্পর্ক খুব ‘মধুর’ নয়। অনেক সময়েই কুণাল প্রকাশ্যে হলেও ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে’ (অর্থাৎ, তৃণমূলের মুখপাত্র হিসাবে নয়) পার্থ সম্পর্কে ‘নির্দয়’ মন্তব্য করেছেন। সেই কুণালের টুইটের চারটি নামের মধ্যে তিনটিই পার্থের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় প্রত্যাশিত ভাবেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১.৪২ মিনিটে কুণাল টুইট করেন, ‘‘শিক্ষায় নিয়োগ বিতর্ক: দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েক জন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।’’
শিক্ষায় নিয়োগ-বিতর্ক।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 23, 2023
দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েকজন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি?
তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি?
তদন্ত হোক।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।
এর পরেই বেলা ১২টা নাগাদ আদালতে ঢোকার মুখে পার্থকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপবাবু, শুভেন্দুবাবুরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন? ২০০৯-১০-এর সিএজি রিপোর্ট পড়ুন। সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছেন কারণ, আমি তাঁদের বলেছি করতে পারব না! আমি নিয়োগকর্তা নই। এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য তো দূরের কথা, আমি কোনও কাজ বেআইনি করতে পারব না। শুভেন্দু অধিকারীর ২০১১-১২ সালটা দেখুন না! ডিপিএসসি-টা কী করেছিলেন।’’
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কুণালের টুইটের নামগুলিই ১৮ মিনিটের ব্যবধানে কী করে বললেন প্রায় ৮ মাস ধরে জেলবন্দি এবং দলের তরফে সাসপেন্ড-হওয়া নেতা পার্থ?
কুণালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘এই কথা আমি আগেও বলেছি। বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকেও বলেছি। যেটা বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলাম, সেটাই বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করেছি। পার্থবাবু কী বলবেন, তা তো আমার জানার কথা নয়! আমরা যেটা অনেক দিন ধরে বলে আসছিলাম, আমাদের যেটা অবস্থান, সেটাই টুইট করেছি।’’ অর্থাৎ, কুণাল বলছেন, তাঁর এবং পার্থের বক্তব্যের তিনটি নামই মিলে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা নেই। ছিলও না। অর্থাৎ, বিষয়টি সমাপতনই বটে!
পার্থের অভিযোগ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘জেলে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। যে সময়ের কথা বলেছেন (২০০৯-১০) তখন আমি রাজনীতিতে আসিনি। এ সব চক্রান্ত করে লাভ হবে না। প্রমাণ হলে জেল খাটব। কিন্তু উনি তো বান্ধবীসমেত জেলে গিয়েছেন। টাকার পাহাড় সবাই দেখেছেন।’’
আর সুজন বলেছেন, ‘‘মাথা গোলমাল হলে অনেক কিছু হয়। আসলে ওঁর সার্কিটটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। ২০০৯-১০ সালের কথা বলছেন! সেই সময় পার্থ কোথায় ছিলেন? তখন তো উনি সরকারের কেউ না বলেই আমার ধারণা। উনি তো বিরোধী দলে! মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। কেন হবে না বলুন তো! অনুব্রতের পাশে দল আছে, পার্থের পাশে কেউ নেই। দিলীপ, শুভেন্দুর কথা বলতে পারব না। শুভেন্দু তখন তৃণমূলে ছিলেন। বাম আমলে এ রকম টাকার খেলা হয়েছে, খুঁজে বার করতে পারবেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy