Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

নিয়োগ পর্বেও টেট নিয়ে ফের মামলার কাঁটা

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অথচ মঙ্গলবারেও টেট পাশ করা বেশ কিছু প্রার্থীর নথি যাচাই শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাতে টেট-কুয়াশা গাঢ় হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৮
Share: Save:

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অথচ মঙ্গলবারেও টেট পাশ করা বেশ কিছু প্রার্থীর নথি যাচাই শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাতে টেট-কুয়াশা গাঢ় হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ঘোষিত সব আসনে নিয়োগ পর্ব সাঙ্গ হওয়ার আগেই নতুন করে কিছু প্রার্থীর নথি যাচাই করা হচ্ছে কী ভাবে? প্রশ্ন, সংশয়-সন্দেহের মধ্যে বিঁধছে আইনি কাঁটাও। আজ, মঙ্গলবার টেট নিয়ে জোড়া মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

নতুন করে কিছু প্রার্থীর নথিপত্র পরীক্ষার ব্যাপারে পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, এ দিন আলিপুরদুয়ারের বিশ্বজিৎ বর্মন এবং পূর্ব মেদিনীপুরের প্রলয় সরকার ছাড়াও বেশ কয়েক জন প্রার্থী পর্ষদে তাঁদের প্রশিক্ষণের নথিপত্র জমা দেন। সেগুলো যাচাই করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কিন্তু এতে টেটের ঘোলা জল আরও ঘোলা হচ্ছে বলেই মনে করছে শিক্ষা শিবিরের একটি অংশ। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে জলঘোলা চলছে প্রথম থেকেই। ৩১ জানুয়ারি প্রার্থী-তালিকা ঘোষণার কথা বলা হলেও পূর্ণাঙ্গ মেধা-তালিকা কেউ চোখে দেখেননি। ৪২ হাজার ৯৪৯ শূন্য পদের মধ্যে ৪২ হাজার ৪০০ নিয়োগ হয়ে গিয়েছে বলে বিধানসভায় জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রশ্ন উঠছে, সেই প্রক্রিয়া শেষ না-করেই ফের অনেকের নথি যাচাই করা হচ্ছে কী ভাবে? পর্ষদের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘ওঁরা টেট পাশ করেছেন। প্রশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও অক্টোবরে যথাযথ নথি দেখাতে ভুল করেছেন। সেই জন্যই ওঁদের ফের সুযোগ দেওয়া হবে।’’ এখানেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে এর শুরু অনেক আগেই।

আরও পড়ুন: বিধানসভায় ভাঙচুর, ক্ষতি ১২ লক্ষেরও বেশি, সরব বিরোধীরা

ফের একের পর এক অস্বচ্ছতা সামনে আসে। কোনও পূর্ণাঙ্গ মেধা-তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। প্রাথমিক জেলা সংসদে প্রার্থী-তালিকা পাঠালেও কেন্দ্রীয় ভাবে তা প্রকাশ্যে আসেনি। হ্যাকিং ও জালিয়াতির ভূত দেখিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রার্থী-তালিকা দেয়নি পর্ষদ। তার উপরে ফের অন্য প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে।

তোলপাড় চলছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডিতে আব্দুর রহিম (২৪) নামে এক ছাত্রনেতার আত্মহত্যার ঘটনায়। পরিবার ও পড়শিদের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষক-পদের জন্য দালালকে টাকা দিয়েছিলেন আব্দুর। কিন্তু নিয়োগের ডাক না-পেয়ে এই পথ নিয়েছেন।

টেট-উত্তীর্ণ সাধারণ শ্রেণির ৪৫ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ওই প্রার্থীদের অভিযোগ, সংসদ তাঁদের প্যারাটিচার (পার্শ্বশিক্ষক) ক্যাটিগরিতে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু তাঁরা কেউই প্যারাটিচার নন। তাই ওই কাজের শংসাপত্রও নেই। ফলে কাউন্সেলিং আটকে যায়। নিয়োগপত্রের দাবিতে মঙ্গলবার তাঁরা বিক্ষোভ দেখান সংসদে। বেলা দেড়টা নাগাদ পুলিশ সংসদের চেয়ারম্যানকে বার করে আনে। তার পরেই চাকরিপ্রার্থীদের টেনেহিঁচড়ে সংসদ-চত্বর থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

অনেক অস্বচ্ছতা সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগের কর্মকাণ্ড শেষ হতে চলেছে বলে পর্ষদ-কর্তাদের দাবি। কিন্তু বহু প্রশ্নের উত্তর পেলেন না বঙ্গবাসী। অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে পর্ষদে। নতুন করে মামলার কাঁটা বিঁধেছে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই। আজ, বুধবার প্রাথমিকের টেট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দু’টি মামলার যৌথ শুনানি হওয়ার কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

TET Examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy