মইদুলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বেসরকারি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে হার মেনেছেন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যা। সোমবার ভোরে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই খবরে আক্ষরিক অর্থেই যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মইদুলের পরিবার। শোকস্তব্ধ কোতুলপুরের শিহর-গোপীনাথপুর অঞ্চলের চোরকলা গ্রামও।
ডিওয়াইএফআই নেতৃত্বের দাবি, গোপীনাথপুরে তাঁদের সংগঠনের ইউনিট সম্পাদক ছিলেন মইদুল। এলাকায় তিনি পরিচিত ‘ফরিদ’ নামে। পেশায় ছিলেন অটোচালক। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। কিন্তু বরাবরই ‘লড়াকু’ মানসিকতার ছেলে ফরিদ। এমনটাই বলছেন তাঁর সংগঠনের সতীর্থরা। ডিওয়াইএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘খুব সিরিয়াসলি রাজনীতি করতেন মইদুল। সংগঠনের প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন তিনি।’’
মইদুলের বাবা মারা গিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর মা তাহমিনা বিবি, স্ত্রী আলেয়া বিবি। রয়েছে তিন কন্যাসন্তানও। মইদুলের রাজনৈতিক আন্দোলন বা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ তাঁদের কাছে নতুন কিছু ছিল না। কিন্তু সোমবার ভোরবেলা তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে আচমকাই বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। সেই সঙ্গে মনের কোণে উঠে আসছে নানা আশঙ্কাও। বাড়ির এক মাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যু যেন আচমকাই খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে গোটা পরিবারকে। প্রিয় ফরিদের মৃত্যুতে শোভে ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম।
মইদুলের পরিবারের পাশে থাকার অভয় দিচ্ছে ডিওয়াইএফআই। অভয় আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘আমরা ধারাবাহিক ভাবে মইদুলের পরিবারের পাশে থাকব। আর্থিক সাহায্যের জন্য আমরা রাজ্য তথা দেশ জুড়ে পথে নামব। তবে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের লাঠির আঘাতে কারও মৃত্যু হচ্ছে, এমন নজির বাংলায় কখনও ছিল না।’’
মইদুলের মৃত্যুতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে সরকারের ভাড়াটে গুন্ডাদের (পুলিশের) লাঠির ঘায়ে যুবক ফরিদ মিদ্যা শহিদ হলেন। যাঁরা রাজনীতিকে ‘খেলা’ মনে করছেন, তাঁদের উপরি রোজগার আছে। তাঁরা জানেন না যে বেকারত্বের জ্বালা, প্রতিবাদের মিছিল আর শহিদের মৃত্যু— এর কোনওটাই কিন্তু ছেলেখেলা নয়। নিঃস্ব জনগণ সে কথা জানেন। তাঁরাই সময়মতো এই অন্যায়ের জবাব দেবেন।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy