বীরপাড়ায় প্রচারে শুভেন্দু অধিকারী ও মনোজ টিগ্গা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে এসে রবিবার আর জি কর কাণ্ড-সহ রাজ্যে নারী নির্যাতনের নানা ঘটনা নিয়েই সরব হল বিরোধীরা। পাল্টা বিভ্রান্তি তৈরির অভিযোগ তুলেছে শাসক দল। তারই পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ সব দলের নেতা-নেত্রীরা স্থানীয় নানা বিষয় নিয়েও মুখ খুলেছেন।
রাজ্যে যে ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে, তার মধ্যে একমাত্র মাদারিহাটই বিজেপির দখলে ছিল। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার সেই বিধানসভা এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। বীরপাড়ায় গিয়ে এ দিন বন্ধ চা-বাগান, চা-শ্রমিকদের অবস্থা, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির প্রতিশ্রুতি-সহ নানা স্থানীয় বিষয় তুলে ধরেছেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গেই তাঁর আহ্বান, “অভয়ার মা-বাবাকে দেখে সকলে জেগে উঠেছেন। কেউ ভয় পাবেন না, সকলে নির্ভয়ে ভোট দেবেন।’’
কোচবিহারের সিতাইয়ে দু’দিন আগে কংগ্রেস এবং এ দিন বামেদের প্রচার-সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছিল। বালুরঘাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও কোচবিহারে ‘গুন্ডারাজের’ অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, “গুন্ডাদের রাজা হচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। ভোট হচ্ছে না, গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। তোলাবাজি, টাকা চুরি চলছে।”
আর জি কর-কাণ্ডের সূত্রে এ দিন তৃণমূলের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ফের বিঁধেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় তিনি বলেছেন, “যাঁরা আর জি কর নিয়ে ‘জাস্টিস জাস্টিস’ বলে আন্দোলন করলেন, এক বারও তাঁদের কারও মুখে শুনেছেন, মমতার পদত্যাগ চাই?” পাশাপাশি, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কেও কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য, “হাই কোর্টে কেস চলছিল। মাঝখান থেকে সুপ্রিম কোর্টের ওই ব্যক্তি, অবসর নেবেন, সেই চন্দ্রচূড় ঝাঁপ দিয়ে জলটাকে ঘোলা করে দিলেন!”
যদিও বিভ্রান্তি তৈরির অভিযোগে পাল্টা সরব হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তালড্যাংরায় প্রচারে গিয়েই তিনি বলেছেন, “কোথাও ধর্ষণ হলে লাফিয়ে চলে যাচ্ছে সিপিএম, বিজেপি। এক জন নারীর প্রতি অন্যায় হলে, তার বিচার চাই।” আর জি করের ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতির কথা উল্লেখ করে তাঁর আরও দাবি, “মমতার পুলিশ এক জনকে ধরল। আদালত তদন্ত সিবিআইকে দিল। কিন্তু ওই এক জনের পরে আর কাউকে ধরতে পারল না। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।”
শাসক তৃণমূল কংগ্রেস বেশি জোর দিচ্ছে স্থানীয় বিষয়েই। নৈহাটিতে তাঁদের প্রার্থী সনৎ দে সব সময় মানুষের পাশে থাকবেন, এমন বার্তা দিয়ে রোড-শো করেছেন সাংসদ পার্থ ভৌমিক, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বিধায়ক-অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। তবে এলাকার চটকল-শিল্পের অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে দলের প্রার্থী রূপক মিত্রের প্রচারে এসে বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ বলেছেন, “কোনও শিল্প নেই, যেগুলো ছিল, বন্ধ করিয়েছে।” নৈহাটির পঞ্চায়েত এলাকায় এ দিন সভা করতে গিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘এখানে প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার শুধু সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের নন, বামফ্রন্টেরও নন। তিনি আমাদের সকলের প্রার্থী।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বামফ্রন্টকে হারিয়ে তৃণমূলকে আনলে সব সমস্যার সমাধান হবে যাঁরা মনে করেছিলেন, তাঁরা ঠকেছেন। আর যাঁরা মনে করেছিলেন বিজেপি পারবে তৃণমূলকে শিক্ষা দিতে, তাঁরা ডাবল ঠকেছেন! বিকল্প একটাই।’’ হাড়োয়ায় প্রচারে এ দিন বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে সরব হয়েছেন সিপিএম সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য এবং আইএসএফের চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকী। ওই কেন্দ্রে বামফ্রন্টের সমর্থনে লড়ছেন আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার এ দিন মাদারিহাট বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে কর্মিসভায় যোগ দিয়েছিলেন। দলের প্রার্থী বিকাশ চম্প্রমারি এবং এআইসিসি-র সহ-পর্যবেক্ষক আসফ আলি খানকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারও করেন তিনি। কংগ্রেসের দাবি, শুভঙ্করের উপস্থিতিতে তাদের দলে এ দিন যুব তৃণমূলের ২০ জন যোগ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy