Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Scam

jobs Scam: টাকা নিয়ে চাকরি দিত ‘রঞ্জন’! উপেনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে

বছরখানেক আগে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় রাজ্যের প্রাক্তন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী উপেন বিশ্বাস এই দাবি করেছিলেন ।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সীমান্ত মৈত্র  
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৬:৪৬
Share: Save:

প্রাথমিকে দর ১২-১৩ লক্ষ টাকা। উচ্চ প্রাথমিকে ১৮ লক্ষ। নবম-দশম শ্রেণিতে ২০-২৫ লক্ষ।এই অঙ্কের টাকা ফেললেই মিলবে শিক্ষকতার চাকরি!

বছরখানেক আগে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় রাজ্যের প্রাক্তন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী উপেন বিশ্বাস এই দাবি করেছিলেন (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার, তবে ভিডিয়োটি তাঁরই, শুক্রবার তা স্বীকার করেছেন উপেন)। ভিডিয়োয় তাঁর দাবি ছিল, দুর্নীতির এই চক্র চালান ‘রঞ্জন’ নামে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার এক বাসিন্দা। ‘গোপনীয়তার স্বার্থে’ আসল নাম উল্লেখ করেননি উপেন। গোটা রাজ্য যখন শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড়, তখন উপেনের এই পুরনো ভিডিয়ো নতুন করে সামনে এসেছে।

উপেন রাজনীতিতে আসার আগে ছিলেন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা। বিহারে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদকে গ্রেফতার করেছিলেন তিনি। ভিডিয়োয় উপেনের দাবি, ঘটনার কথা প্রথম তিনি শোনেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর থেকে। পরে ‘রঞ্জন’ সম্পর্কে বহু তথ্য তাঁর কানে আসে। বাগদা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে জিতে ২০১১-২০১৬ পর্যন্ত মন্ত্রী ছিলেন উপেন। তবে তাঁর বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা রঞ্জনকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন কি না, তা ভিডিয়ো-বার্তায় স্পষ্ট করেননি।

শুক্রবার টেলিফোনে উপেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরেছি। এক বছর আগে ইউটিউবে ভিডিয়োটি আপলোড করি। তখন এত শোরগোল হয়নি।’’ কিন্তু সব জানতে পেরেও তিনি কেন বিষয়টি দল বা সংশ্লিষ্ট দফতরকে বা পুলিশে জানালেন না? এখনই বা কেন চুপ করে আছেন? শুক্রবার টেলিফোনে উপেন বলেন, ‘‘ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীকে অভিযোগ করতে বলেছিলাম, তিনি করেননি। তা ছাড়া, রঞ্জন খুবই জনপ্রিয়। দলের সকলেই তাঁর সম্পর্কে জানতেন। আমি কোনও অভিযোগ করিনি।’’ ‘রঞ্জন’ প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ বাগদার স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। বাগদার বর্তমান বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস উপেনের ভিডিয়ো নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তৃণমূল ছেড়েছেন উপেন। রাজ্য সরকারের সব পদ থেকেও ইস্তফা দেন। ভিডিয়োটি তার পরেই আপলোড করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

ভিডিয়োয় উপেন অভিযোগ করছেন, রঞ্জন নামে বাগদার এক ব্যক্তি টাকা নিয়ে চাকরি দিতেন। ফোনে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘সকলেই ওঁকে (রঞ্জন) চেনেন। বাগদায় খুবই জনপ্রিয়।’’ ‘জনপ্রিয়তা’ এতটাই, লোকে রঞ্জনের বাড়ির পাশ দিয়ে গেলে হাত তুলে প্রণাম জানায়, বলে পবিত্র স্থানের পাশ দিয়ে হাঁটছি— ভিডিয়ো-বার্তায় বলছেন উপেন। তাঁর দাবি, রঞ্জনের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে লোক ঠকানোর অভিযোগ নেই। টাকা নিয়ে চাকরি দিতে না পারলে রঞ্জন সব টাকা ফেরতই শুধু দেন না, সঙ্গে সুদও দেন বলে ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানতে পেরেছেন তিনি। তাই ভিডিয়োর নামও উপেন রেখেছেন— ‘রঞ্জন সৎ!

ভিডিয়ো-বার্তায় উপেন জানিয়েছেন, ‘সৎ’ রঞ্জন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতেন। সকলকে বলা হত, পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিতে। খাতায় নাম এবং রোল নম্বর ছাড়া আর কিছু লেখা না থাকে।

উপেনের দাবি, তাঁর প্রথমে মনে হয়েছিল, প্রাক্তন সেনাকর্মীটি ‘গাঁজাখুরি গল্প’ বলছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বাগদা, বনগাঁ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার অনেকেই (যাঁরা প্রচুর পেনশন পান যাঁরা, ঠিকাদারি করেন, রেশন ডিলার— তাঁদের অনেকের সন্তান) চাকরি পেয়েছেন। এ ছাড়া, দু’চার বিঘে জমি বিক্রি করে সেই টাকা ঘুষ দিয়ে অনেকে চাকরি পেয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ।

ভিডিয়োয় উপেন জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে বাগদার এক তৃণমূল উপপ্রধান তাঁর বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন। উপপ্রধান জানান, রঞ্জন নাকি একই পরিবারের ৯ জন সদস্যকে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। উপেনকে ভিডিয়োয় বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কাটমানি নিয়ে যখন রাজ্যে নেতারা ঘেরাও হচ্ছিলেন, তখনও রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও তো দূরের কথা, সব রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। এক মন্ত্রীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠানের সব মাছ রঞ্জন দিয়েছিলেন।’’ ভিডিয়োয় উপেন বলছেন, ‘‘রঞ্জন এখনও বাগদা ব্লকে সগৌরবে অবস্থান করছেন। তাঁর এজেন্টরা রাজ্যে ছড়িয়ে আছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy