অন্য দিকে, কলকাতা হাই কোর্টেও রামপুরহাটের বগটুই নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সবক’টি মামলা একত্রিত করেই বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ হয়েছে আদালতে। সেখানেও মামলাকারীরা সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। তবে বৃহস্পতিবার রায়দান স্থগিত রাখা হয়। শুক্রবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বগটুই-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
বগটুই গ্রামে পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
হতাহতদের সকলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। অভিযুক্তদের প্রায় সকলেও তা-ই। কিন্তু রামপুরহাটের বগটুইের হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ বার সক্রিয়তা শুরু করল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা। সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত নিজেই বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বগটুই-কাণ্ড নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। বিচারবিভাগের পর্যবেক্ষণে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) বা সিবিআই-কে দিয়ে ওই ঘটনার তদন্ত করানো হোক বলে মামলাকারী আর্জি জানিয়েছেন শীর্ষ আদালতে।
এক দশক আগে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি রক্ষা’-র উদ্দেশ্যে হিন্দু সেনার প্রধানের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক কারণ’ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। অতীতে সংখ্যালঘুদের উপর একাধিক হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও সংখ্যালঘু স্বার্থরক্ষায় পদক্ষেপের নজির নেই হিন্দু সেনার।
জনস্বার্থ মামলায় মূলত আর্জি জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে সিট গঠন করে তদন্ত করা হোক। যদি তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে অতি অবশ্যই যেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে বগটুই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। আবেদনে বলা হয়েছএ, সিট তদন্ত করুক বা সিবিআই, এ ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় যতগুলি এফআইআর দায়ের হয়েছে, মামলা যতদূর এগিয়েছে তার তথ্য যেন তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, কলকাতা হাই কোর্টেও রামপুরহাটের বগটুই নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সবক’টি মামলা একত্রিত করেই বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ হয়েছে আদালতে। সেখানেও মামলাকারীরা সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। তবে বৃহস্পতিবার শুনানি পর্ব শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখা হয়। শুক্রবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বগটুই-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
গত সোমবার বগটুই গ্রামের স্থানীয় বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধানকে ভাদু শেখকে খুন করা হয়। সেই রাতেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সোনা শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে সাতজনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। আরও একজনের মৃত্যু হয় রামপুরহাট হাসপাতালে। এই ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে মহিলা কমিশন, সকলেই এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজেরাই বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবারই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিহতদের পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। প্রত্যেক অপরাধীকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার নির্দেশও দেন। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় রামপুরহাট-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আনারুল হোসেন নামে। হাই কোর্টের নির্দেশে বগটুইবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রামের খোলা জায়গায় বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy