—নিজস্ব চিত্র।
রাখিবন্ধন উৎসবেও মিশে গেল প্রতিবাদের স্বর। রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংস্থা, সংগঠন থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক, সোমবার রাখির দিনে বারবারই ধ্বনিত হল আরজি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদ। তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির রাখিতেও ছিল প্রতিবাদ। বিরোধীরা রাখি বাঁধল আরজি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে। আর রাখি পরিয়েই শাসক দলের দাবি, দোষীর ফাঁসি চাই এবং ‘অপপ্রচার ও কুৎসা’ বন্ধ হোক।
আরজি করের চিকিৎসক-ছাত্রীর খুনের ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিক ও নাগরিক প্রতিবাদ সংগঠিত করতে বড় ভূমিকা নিয়েছে সিপিএম এবং তাদের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন। আরজি কর হাসপাতালে তাণ্ডবের ঘটনার পরে এবং সমাজমাধ্যমে ‘ভুয়ো তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগে গত কয়েক দিনে বহু ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে হেল্পলাইন নম্বর দিয়ে এ দিন সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে, ‘আক্রান্ত প্রতিবাদী’রা চিকিৎসা বা আইনি সহায়তার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডান ক্লাবের সমর্থক বা যে কোনও প্রতিবাদী পুলিশি হয়রানির মুখে পড়লে তাঁদের সহায়তা দেওয়ার জন্য আলাদা করে হেল্পলাইনের ঘোষণা করা হয়েছে এসএফআইয়ের তরফেও। ছাত্র ও যুবদের নিয়ে আরও আন্দোলনের কর্মসূচির ভাবনা-চিন্তাও করছে সিপিএম।
চলমান প্রতিবাদের আবহে দলের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনও আপাতত স্থগিত করে দিয়েছে সিপিএম। নদিয়ার কল্যাণীতে আগামী ২৩ থেকে ২৫ অগস্ট ওই অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। সিপিএম সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সোমবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই বর্ধিত অধিবেশন আপাতত হবে না। তার পরিবর্তে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ২৩ তারিখ এক দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক বসবে। তার আগের দিন, ২২ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণ-সভাও হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য এখন আমাদের তৈরি থাকতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় কল্যাণীতে তিন দিনের বৈঠক চালিয়ে যাওয়া উপযুক্ত হবে না। আন্দোলনের রাস্তায় থাকতে হবে। যাঁরা প্রতিবাদ, আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের রোষের মুখে পড়ছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং আইনি সহায়তা দেওয়ার কাজও করতে হবে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী বৃহস্পতিবার অভিযান করে গণতান্ত্রিক ভাবে স্বাস্থ্যভবন নাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে পূর্ব ঘোষণা মতো আজ, মঙ্গলবার থেকে তাঁদের ধর্না হচ্ছে না। ধর্নার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য বিজেপি। সেই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা আজ। আদালতের অনুমতি মিললে রাত থেকেও ধর্না শুরু হতে পারে বলে জানিয়ে রেখেছেন সুকান্ত। বহরমপুরে এ দিন সন্ধ্যায় প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই অমানবিক ঘটনায় বিভিন্ন ভাবে যারা জড়িত, তাদের সকলের শাস্তির দাবিতে সাধারণ মানুষ এখন রাস্তায় নেমেছেন। আমরা নির্যাতিতার পরিবারের পাশে আছি, মানুষের দাবির সঙ্গে আছি।’’
মহিলাদের সুরক্ষার দাবিতে জেলায় জেলায় এবং কলকাতার ১৫টি এলাকায় এ দিন রাখি বন্ধন কর্মসূচি করেছে বিজেপি। কলেজ স্ট্রিটে বই বিক্রেতা, পথ চলতি মানুষ ও বাস চালকদের হাতে রাখি বেঁধে দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ও মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের দাবিতে এক বিজেপি কর্মী কালো রাখি তৈরি করেছিলেন। বিজেপি প্রভাবিত কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন এ দিন বিকেলে রানুছায়া মঞ্চে রাখি বন্ধন ও সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ করেছে।
মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, মালদহ, বর্ধমানের মেডিক্যাল, আলিপুরদুয়ার-সহ একাধিক জেলার হাসপাতালে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে রাখি পরিয়েছেন শাসক ও বিরোধী নেতা-নেত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy