অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ম্যাচ ছাড়ার পর হতাশ নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম সেটে আলেকজ়ান্ডার জ়েরেভের বিরুদ্ধে পাল্লা দিয়ে লড়াই করলেও কোথাও যে একটা সমস্যা হচ্ছে, এটা বোঝা যাচ্ছিল নোভাক জোকোভিচকে দেখে। কিছুটা শ্লথ নড়াচড়া, কোর্টের মধ্যে সেই পরিচিত আগ্রাসন দেখা যাচ্ছিল না। প্রথম সেট শেষ হতেই আশঙ্কা সত্যি হল। চোটের কারণে জ়েরেভের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন জোকোভিচ। ১১তম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এ বার জেতা হল না। আর কোনও দিন জিততে পারবেন কি না, তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। জোকোভিচ নিজেও খুব একটা নিশ্চিত নন।
ম্যাচের পর তিনি বললেন, “হয়তো আর একটা সুযোগ রয়েছে। কে বলতে পারে? আগে দেখতে হবে এই মরসুমটা কেমন যায় আমার। আপাতত সামনের দিকে তাকাতে চাইছি।” এখন ৩৭ বছর বয়স জোকোভিচের। তরুণ খেলোয়াড়ে ভরা এই প্রতিযোগিতায় আরও এক বার খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও।
সেমিফাইনালে নামার আগে অনুশীলনই করেননি জোকোভিচ। ম্যাচে নেমে বাঁ পায়ের পেশিতে এতটাই টান ধরে যে, তাঁর মতো শারীরিক ভাবে শক্তিশালী ক্রীড়াবিদও ম্যাচ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ম্যাচের পর জোকোভিচ জানিয়েওছেন, পেশি ছিঁড়েছে বলেই ম্যাচ ছাড়তে হয়েছে তাঁকে।
জোকোভিচ বলেছেন, “আলকারাজ় ম্যাচের পর থেকে একটা বলও র্যাকেট দিয়ে মারিনি। ম্যাচের এক ঘণ্টা আগে প্রথম বার শট খেললাম। পেশির চোট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যা করা সম্ভব সেটাই করেছি। ওষুধ খেয়েছি। পায়ে স্ট্র্যাপ বেঁধে খেলার চেষ্টা করেছি। ফিজ়িয়ো অনেক পরিশ্রম করে আজ আমাকে কোর্টে নামতে সাহায্য করেছেন। তবে প্রথম সেটের শেষের দিকে আরও বেশি ব্যথা হতে শুরু করে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ম্যাচ ছেড়ে দেওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম।”
কার্লোস আলকারাজ়ের বিরুদ্ধে ম্যাচেই বাঁ পায়ে চোট পেয়েছিলেন জোকোভিচ। সেই চোট যাতে না বাড়ে তার জন্য অনুশীলন করেননি। তাতেও শেষরক্ষা হল না। জোকোভিচের কথায়, “চোটের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম, প্রথম সেট জিততে পারলেও আমার সামনে পাহাড়প্রমাণ লড়াই অপেক্ষা করে রয়েছে।”
মাত্র এক ঘণ্টা ২১ মিনিট এবং এক সেটেই সেমিফাইনাল ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ায় খুশি হননি রড লেভার এরিনার দর্শকেরা। জোকোভিচের উদ্দেশে ব্যাঙ্গাত্মক শিস দেওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে উঠে সার্বিয়ান খেলোয়াড়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন জ়েরেভ। বলেছেন, “চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়া কোনও খেলোয়াড়কে দয়া করে এ ভাবে বিদ্রুপ করবেন না। আমি জানি সবাই দাম দিয়ে টিকিট কেটেছেন। সবাই পাঁচ সেটের দারুণ লড়াই দেখতে চেয়েছিলেন। তবে আমাদের বুঝতে হবে, জোকোভিচ এই খেলাটার জন্য গত ২০ বছর ধরে নিজের সর্বস্ব দিয়েছে। কুঁচকির চোট, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়েও এই প্রতিযোগিতায় জিতেছে। যদি ও চোটের জন্য খেলতে না পারে, তা হলে সেটাকে সম্মান করতেই হবে।”
তিনি আরও বলেছেন, “গত বছর মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত থাকার সময় জোকোভিচের সঙ্গে কথা বলে চাঙ্গা হয়েছিলাম। আমি নিজেও চাইছিলাম ম্যাচটা পাঁচ সেটে গড়াক। জোকোভিচ এই প্রতিযোগিতা ১০ বার জিতেছে। আজ টাইব্রেকারের সময়েই বুঝেছিলাম ওর কষ্ট হচ্ছে। ফাইনালে উঠে খুশি ঠিকই। তবে জোকোভিচের জন্য চিন্তিত। ও টেনিস সার্কিটে আমার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। জোকোভিচের চেয়ে বেশি সম্মান আর কাউকে করি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy