Advertisement
E-Paper

অশান্ত ধুলিয়ানে শান্তি ফেরাতে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের ‘দূত’ সামিরুল, ঘরছাড়াদের ফেরাতে কী করলেন সেখানে?

অশান্ত ধুলিয়ানকে শান্ত করতে পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকেও, যিনি সর্বদাই সংবাদের শিরোনাম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন। গত কয়েক দিন ধুলিয়ান চষে ফেলেছেন তৃণমূলের এই বাঙালি সংখ্যালঘু নেতা।

ধূলিয়ান শহরের শান্তি মিছিলে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।

ধূলিয়ান শহরের শান্তি মিছিলে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। নিজস্ব ছবি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৪৪
Share
Save

গত কয়েক দিন ধরেই সংবাদের শিরোনামে মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কিছু এলাকা। গোষ্ঠীসংর্ঘষের ঘটনায় উত্তপ্ত জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান এবং ফরাক্কা। সেই সব এলাকায় শান্তি ফেরাতে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে জঙ্গিপুরে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, চুপিসারে বেশকিছু ‘অজ্ঞাত’ রাজনৈতিক মুখদেরও শাসকদলের তরফে পাঠানো হয়েছিল শান্তি ফেরানোর কাজে। অশান্ত ধুলিয়ানকে শান্ত করতে পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকেও, যিনি সর্বদাই সংবাদের শিরোনাম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন। গত কয়েক দিন ধুলিয়ান চষে ফেলেছেন তৃণমূলের এই বাঙালি সংখ্যালঘু নেতা। শমসেরগঞ্জ থেকে যে সব ঘরছাড়া বৈষ্ণবনগরের পল্লালপুর স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন রবিবার তাঁদের ফেরানো হচ্ছে। সেখানে সামিরুল উপস্থিত ছিলেন।

১১ এপ্রিল জঙ্গিপুরে গন্ডগোল শুরু হওয়ার পরেই প্রশাসনিক পদক্ষেপ শুরু করেছিল নবান্ন। রাজনৈতিক ভাবেও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব জেলা তথা এলাকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বার বার কথা বলেও শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও ফল না মেলায় শেষমেশ উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় নিজেদের প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ১৪ এপ্রিল সামিরুলকে ফোনে ধুলিয়ান গিয়ে দলের সব গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

নির্দেশ পাওয়ার পরেই ১৫ এপ্রিল রাজ্যসভার সাংসদ পৌঁছে যান ধুলিয়ান। দলের সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে শান্তি ফেরানোর কাজ শুরু করেন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন থাকায় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ধুলিয়ান শহরের দোকানপাট খোলার ব্যবস্থা করেন তিনি। এর পর শহরের দুই গোষ্ঠীর স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। শান্তি কমিটি গঠন হয়। গোষ্ঠী রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিজের সব উদ্যোগেই জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান, শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম, সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের মতো নেতাদের কৌশলে ব্যবহার করেছেন তিনি। তেমনই এলাকার মন্দির কমিটির প্রধানদের সঙ্গেও কখনও গোপনে, কখনও প্রকাশ্যে বৈঠক করে আশ্বাস দিয়েছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সব নেতাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল তাঁর। ধুলিয়ানের সব গোষ্ঠীর নেতাদের শান্তি মিছিলে শামিল করিয়ে প্রশাসনের আস্থা ফেরাতে বড় ভূমিকা নেন হিমশীতল মানসিকতার সামিরুল।

রাজ্যসভার সাংসদের ভূমিকা প্রসঙ্গে এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন মিলন মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক ষষ্ঠী ঘোষ প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুলের অনুরোধেই আমরা বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছিলাম। সেই বৈঠকে আমরা অঙ্গীকার করেছি যে ধুলিয়ানের শান্তিশৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসনকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। ধুলিয়ানে শান্তি ফেরাতে তাঁর ভূমিকা প্রসঙ্গে সামিরুলকে প্রশ্ন করা হলে কোনও জবাব দিতে চাননি তৃণমূলের এই নয়া সংখ্যালঘু মুখ। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘আসলে আমাদের জেলায় তৃণমূলের নেতারা কেউ কাউকে মানেন না। তাই সামিরুলের মতো মাথা ঠান্ডা রাখা মানুষকে এমন উত্তপ্ত পরিবেশে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে ধুলিয়ান পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, তা মানতেই হবে।’’

বাংলার রাজনীতিতে সামিরুলের আগমন খানিকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই। ২০২৩ সালের রাজ্যসভা ভোটের সময় আচমকাই তাঁর নাম ঘোষণা করে দেন সর্বভারতীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জানা যায়, পেশায় দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের এই যুবা অধ্যাপক আসলে সমাজকর্মী হিসাবেই পরিচিত গ্রামবাংলায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সরাসরি তৃণমূলের মঞ্চ থেকে প্রচার না করলেও ‘নো ভোট টু বিজেপি’ শীর্ষক প্রচারের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনিই।

সামিরুলের বাবা প্রয়াত মহম্মদ জাকেরিয়া ছিলেন বীরভূম জেলা কংগ্রেসের দাপুটে নেতা। বাবা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, মেধাবী সামিরুল বরাবরই নিজেকে রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে তাঁকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হলে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। যোগদানের পর সামিরুল দলের হয়ে বীরভূমের ডেউচা পাঁচামিতে প্রকল্প শুরু করাতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাই পুরস্কারস্বরূপ তাঁকে রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

Samirul Islam Dhuliyan Murshidabad TMC TMC MP

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।