দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে শপথ গ্রহণের আগেই রাজীব কুমার, ভারতী ঘোষদের পুরনো পদে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ জারি হয়েছিল। বার্তা ছিল তখনই। এ বার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আইপিএস রাজীবকে ‘সেরা অফিসার’ বলে দরাজ শংসাপত্র দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোটের সময়ে নির্বাচন কমিশন যে সব পুলিশকর্তা বা আমলাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল, তাদেরই আবার কী ভাবে রাজ্য সরকার স্বপদে ফিরিয়ে আনল, তা নিয়ে সোমবার বিধানসভায় পুলিশ বাজেটে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী সারদা-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ওই তদন্তে যিনি তথ্য লোপাট করার জন্য হার্ড ডিস্ক নষ্ট করেছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁকেই আবার স্বমহিমায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে ফিরিয়ে আনা হল কী ভাবে? জবাব দিতে উঠে বিরোধীদের এই প্রশ্ন উড়িয়ে গ্যালারিতে ফেলতে চেয়েছেন পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী! তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজীব কুমার সেরা অফিসার। ওর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, আমি জানি তাদের মধ্যে রাজীব সেরা।’’ সারদা-কাণ্ডে রাজীবের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) ভালই কাজ করছিল বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পিছনের গ্যালারিতে বসে রাজীবের মুখে তখন গর্বের হাসি! পরে অধিবেশন শেষে বিধানসভার লনে মুখ্যমন্ত্রীর সান্ধ্য হণ্টনে পুলিশ কমিশনারকেই জোর কদমে তাল মেলাতে দেখা গিয়েছে। সুজন অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘তা হলে কি সৌমেন মিত্র অযোগ্য?’’
শুধু রাজীবই নন, তাঁর পছন্দের প্রাক্তন পুলিশকর্তা নাপরাজিত মুখোপাধ্যায়েরও এ দিন পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুজনবাবুর প্রশ্ন ছিল, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্বে এক জন প্রাক্তন পুলিশকর্তাকে রাখা হলে সেই কমিশন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করবে কী ভাবে? ভক্ষককেই তো রক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে! জবাবি ভাষণে মমতা বলেছেন, আইপিএস বা আইএএস হলে তিনি মানবাধিকারের কাজ করতে পারবেন না, এমন ধারণা অর্থহীন। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি চেয়েছিলেন হাইকোর্টের প্রাক্তন কোনও বিচারপতি মানবাধিকার কমিশনের মাথায় বসুন। তিনি নিজে এমন প্রাক্তন বিচারপতির সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। মমতার কথায়, ‘‘কেউ রাজি না হলে কী করব? আমি কি জোর করে তুলে আনব?’’
আইপিএসদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আস্থা বজায় রেখে এ দিন বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে রাজ্যের অন্যতম তথ্য কমিশনার বাছা হয়েছে সদ্যপ্রাক্তন ডিজি জিএমপি রেড্ডিকে। রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য তথ্য কমিশনার এখন আইএএস জ্ঞানদত্ত গৌতম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy