Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC

অবৈধ কয়লা কারবারে অভিযুক্ত রাজু বিজেপিতে

দুর্গাপুরের পলাশডিহায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের হাত থেকে  বিজেপির পতাকা নিচ্ছেন  রাজু ঝা (মাস্ক পরে)। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

দুর্গাপুরের পলাশডিহায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের হাত থেকে বিজেপির পতাকা নিচ্ছেন রাজু ঝা (মাস্ক পরে)। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা 
দুর্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

এলাকায় অবৈধ কয়লার কারবার ও তাতে শাসকদলের যোগ নিয়ে সরব হয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সে সূত্রে সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমানে ইডি, সিবিআই-অভিযানও হয়েছে। সোমবার রাজেশ (ওরফে রাজু) ঝা নামে এক ব্যবসায়ী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। কারণ, তৃণমূল ও পুলিশ সূত্রের দাবি, বর্তমানে হোটেল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত রাজু বেআইনি কয়লার কারবারে অভিযুক্ত ছিলেন। আছেন। মামলাও চলছে।

তৃণমূলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের টিপ্পনী, ‘‘মাফিয়ার দলে পরিণত হয়েছে বিজেপি। রাজুর যোগদানের কয়েক মাস আগে কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আর এক কয়লা-মাফিয়া, রানিগঞ্জের বক্তারনগরের বাসিন্দা জয়দেব খাঁ।’’ এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘যেই বিজেপিতে যোগ দিলেন, তাঁরা মাফিয়া হয়ে গেলেন? ওঁরা মাফিয়া হয়ে থাকলে তৃণমূল সরকার এতদিন তাঁদের গ্রেফতার করেনি কেন? তাঁরা রাজনীতি করতে চান, তাই দল সুযোগ দিয়েছে।’’ তা হলে কি বলছেন রাজু, জয়দেব কয়লা-মাফিয়া নন? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমি সার্টিফিকেট দেওয়ার কেউ নই।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, রাজুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন। এ ব্যাপারে বহু চেষ্টা করেও সভার পরে, রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

সোমবার দুর্গাপুর সভা করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। দুর্গাপুরের পলাশডিহার সভামঞ্চে অর্জুন সিংহ ও বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন গেরুয়া জওহর কোট পরা রাজু। তখন মঞ্চ থেকে রাজুর পরিচয় দেওয়া হয় ‘বিশিষ্ট সমাজসেবী’ হিসেবে। সভাস্থলে অনেকের হাতে ছিল, ‘আমরা রাজু দাদার অনুগামী’ লেখা প্ল্যাকার্ড, গলায় পোস্টার। এতেই বাধে বিতর্ক।

কে এই রাজু ঝা? পুলিশ সূত্রের দাবি, রাজুর উত্থান রানিগঞ্জ থেকে। প্রথম জীবনে কয়লার ট্রাকের খালাসি ছিলেন। বাম জমানা থেকে কয়লা-মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। ২০১১ সালের আগে, খনি অঞ্চলে প্রায় দেড় দশক ধরে অবৈধ কয়লার কারবারে রাজুর নাম ছিল প্রথম সারিতে। অণ্ডাল থেকে ডানকুনির আগে পর্যন্ত তাঁর কয়লার ‘প্যাড’ (অবৈধ কারবারের রসিদ) চলত। বীরভূমের বিভিন্ন থানাতেও অভিযোগ রয়েছে। বেআইনি কয়লা কারবারে যুক্ত থাকার একটি মামলায় ২০০৬ সালে কয়েক দিন জেল খাটেন। কয়লা সংক্রান্ত নানা অভিযোগে ২০১১-এর ৩ জুলাই রাজুকে পুলিশ রানিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। এর পরেও তিনি বহু বার গ্রেফতার হন। ২০০৬-এর পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে দুর্গাপুরে বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। সিটি সেন্টারে ব-কলমে তাঁর রেস্তরাঁ, পার্কিং প্লাজ়া, শাড়ির দোকান, হোটেল রয়েছে।

বিজেপি সূত্রের দাবি, দিনপাঁচেক আগে দুর্গাপুরের একটি হোটেলে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয় রাজুর। তার পরে এ দিন তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের কটাক্ষ, ‘‘দুষ্কৃতীদের নিরাপদ আশ্রয় বিজেপি, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল।’’ তবে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের মন্তব্য, ‘‘রাজু ঝা আজ আমাদের দলে যোগ দিলেন, বলে কুখ্যাত হয়ে গেলেন! তিনি ব্যবসায়ী। তাঁর হোটেল, কারখানা রয়েছে। মানুষজন সঙ্গে রয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Rajesh Jha Jitendra Tiwary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy