রাজীব কুূমার। —ফাইল চিত্র
গ্রেফতারি এড়াতে মরিয়া রাজীব কুমার। আলিপুর জেলা আদালতে তাঁর আগাম জামিনের আবেদনকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন ঘণ্টা কড়া টক্কর চলল সিবিআই ও রাজীব কুমারের আইনজীবীর মধ্যে। তিনি আদৌ আগাম জামিন পাবেন কি না তা স্পষ্ট হয়ে যাবে আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই।
বারাসতের জেলা জজের আদালত তাঁর আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার, আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটও জানিয়ে দিয়েছেন, পরোয়ানা ছাড়াই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে পারবে সিবিআই। এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে রাজীবের হাতে ছিল আলিপুর জেলা আদালতে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন করা। শুক্রবার তা-ও করেছেন তিনি। শনিবার সেই মামলার শুনানি চলছে আলিপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুজয় সেনগুপ্তের এজলাসে।
আগাম জামিনের আবেদন মামলার শুনানি শুরু হতেই রাজীবের হয়ে সওয়াল শুরু করেন তাঁর আইনজীবী দেবাশিস রায়। টানা ৪৫ মিনিট ধরে রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধানের আগাম জামিনের স্বপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন তিনি। বিভিন্ন মামলার উদাহরণ টেনে এনে বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন তাঁর মক্কেলের আগাম জামিন প্রয়োজন। রাজীব কুমারের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর রাজীব কুমারকে কতগুলি নোটিস পাঠানো হয়েছিল তা জানতে চান বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত। এর পর কিছু ক্ষণের বিরতির নির্দেশ দেন বিচারক। বিরতির পর তিনি সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য শোনা শুরু করেন।
এদিন আগাম জামিনের বিরোধিতা করতে গিয়েও প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ধরে পাল্টা সওয়াল করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র। ১৪টি বিভিন্ন মামলার রেফারেন্স তুলে ধরেন তিনি। সিবিআইয়ের আইনজীবী যে রেফারেন্স দেন তার বিরোধিতা করেন রাজীব কুমারের আইনজীবীও। তিনি সাওয়াল করতে গিয়ে বলেন, ‘‘একজন আইপিএস আইনভঙ্গ করে পলাতক রয়েছেন। তাহলে এর থেকে সমাজের কাছে কী বার্তা যাবে।? এটা মেগা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি। যখন তিনি বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন সেই সময়ে সল্টলেকে সারদার অফিস ছিল এবং রাজ্য জুড়েই সারদার রমরমাও চলছিল। রাজীব কুমার দায় এড়াতে পারেন না।’’
পরে সংবাদমাধ্যমকে রাজীব কুমারের আইনজীবী বলেন, ‘‘বিধাননগর এলাকায় সারদার যে অফিসগুলি চলছিল তাঁর সম্পর্কে কমিশনারেটের কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টা নজরে আসতেই তদন্ত শুরু করে বিধাননগর কমিশনারেট। সিট গঠনের আগেই ইনভেস্টিগেশান করে তাঁরা। সিট ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সমস্ত তথ্য তুলেও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা স্ংস্থাকে।’’ রাজীব আইনজীবীর যুক্তি, মূল স্ক্যামের সঙ্গে রাজীব কুমার যুক্ত এ কথা সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের হলফনামায় বলেনি। তা হলে আজকে দাউদ ইব্রাহিম, চিদাম্বরমের নাম আসছে কী করে?
আরও পড়ুন: আগাম জামিনের আর্জি রাজীবের, প্রশ্নের মুখে স্ত্রী
অন্য দিকে, রাজীব কুমারকে হন্যে হয়ে খুঁজছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকে চলছে বেনজির তল্লাশি। এক দিকে যখন আগাম জামিনের জন্য আলিপুর আদালতে সওয়াল-জবাব চলছে তখনও অবশ্য রাজীবের খোঁজে অভিযান জারি রেখেছে সিবিআই। এ দিন গোয়েন্দা প্রধানের অফিস অর্থাৎ ভবানী ভবনে যান তাঁরা সিবিআই আধিকারিকরা। কিছু ক্ষণ পর বেরিয়েও যান তাঁরা।
আরও পড়ুন: সোমবার ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের পরের দিন মোদীর সঙ্গে কথা বলবেন ট্রাম্প!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy