Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

যাত্রীর পরামর্শ, রেলের কুর্নিশ

রেলের স্বাস্থ্য উদ্ধারে তাঁরা যে যাত্রীদেরও সামিল করতে চান, এক নিত্যযাত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানিয়ে তা বুঝিয়ে দিলেন রেলকর্তারা। মোবাইলে হাওড়া স্টেশনের কিছু অসুবিধার কথা লিখে হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন পিনাকী গঙ্গোপাধ্যায় নামে শ্রীরামপুরের এক নিত্যযাত্রী। ম্যানেজারের নম্বর তিনি পেয়েছিলেন সহযাত্রীদের কাছ থেকেই। গত সপ্তাহে রেলের পাল্টা ফোন পান তিনি।

পিনাকী গঙ্গোপাধ্যায়

পিনাকী গঙ্গোপাধ্যায়

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

রেলের স্বাস্থ্য উদ্ধারে তাঁরা যে যাত্রীদেরও সামিল করতে চান, এক নিত্যযাত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানিয়ে তা বুঝিয়ে দিলেন রেলকর্তারা।

মোবাইলে হাওড়া স্টেশনের কিছু অসুবিধার কথা লিখে হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন পিনাকী গঙ্গোপাধ্যায় নামে শ্রীরামপুরের এক নিত্যযাত্রী। ম্যানেজারের নম্বর তিনি পেয়েছিলেন সহযাত্রীদের কাছ থেকেই। গত সপ্তাহে রেলের পাল্টা ফোন পান তিনি। ফোনে তাঁকে অনুরোধ করা হয়, ২৬ মে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ তিনি যেন হাওড়া স্টেশনে আসেন। রেলকর্তারা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান।

সময়মতো হাওড়া স্টেশনে হাজির হন পিনাকীবাবু। স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করার পরে তাঁকে বসতে বলা হয়। ওই রেলকর্তা বলেন, পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার আর কে গুপ্ত স্টেশনে এসে নিজেই কথা বলবেন পিনাকীবাবুর সঙ্গে। রেলের কর্তারা একে একে হাজির হন। আসেন জেনারেল ম্যানেজারও। পিনাকীবাবুকে সঙ্গে নিয়েই প্ল্যাটফর্মে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। সোজা তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে।

কিছুটি এগিয়ে থেমে যান সকলেই। দেখা যায়, সামনের কিছুটা জায়গা সবুজ ফিতে দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আচমকা রেলকর্তাদের জড়ো হতে দেখে সকালের ব্যস্ত সময়ে ভিড় জমে যায়। কোনও রকমে পাশ কাটিয়ে থালায় একটি কাঁচি নিয়ে হাজির হন এক রেলকর্মী। পিনাকীবাবুর হাতে ওই কাঁচি তুলে দিয়ে জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘‘আপনি ফিতে কেটে উদ্বোধন করুন। এই পরিকল্পনা আপনার।’’

পিনাকীবাবু এক জন পেশাদার পরামর্শদাতা। হাওড়া মেন লাইনের নিত্যযাত্রী হওয়ার সুবাদে রেলকেও একটি গঠনমূলক পরামর্শ দিয়েছিলেন। কী সেই পরামর্শ?

পিনাকীবাবুর বক্তব্য, হাওড়া প্ল্যাটফর্মের টিকিট কাউন্টারের পাশে লোহার রেলিং দিয়ে একটি বড় এলাকা অহেতুক ঘিরে রাখা ছিল। ওই রেলিং কোনও কাজের নয়। উল্টে যাত্রীদের চলাচলের পথে বাধা তৈরি করছিল। তিনি তাই রেলকে জানিয়েছিলেন, ওই রেলিং খুলে দিলে অনেকটা জায়গা খালি হবে। ভিড়ের সময় সুবিধা হবে যাতায়াতের।

রেল জানিয়েছে, প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখেন কর্তারা। তার পরেই কাজ শুরু হয়। সাজানো-গোছানোর পরে হাওড়া স্টেশনের ওই এলাকাটি এখন অন্য রকম চেহারা নিয়েছে। অনেক বেশি খোলামেলা হয়েছে পরিবেশ।

পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার আর কে গুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা চাই, পিনাকীবাবুর মতো সব যাত্রীই এগিয়ে আসুন। ভাল প্রস্তাব পেলে নিশ্চয়ই তা রূপায়ণ করা হবে। ‘রেল উপভোক্তা পক্ষ’ সেই জন্যই।’’ রেল জানিয়েছে, প্রতিটি জোনের ফেসবুক পেজে যাত্রীদের মতামত চাওয়া হচ্ছে। ১৩৮ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানোরও ব্যবস্থা আছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE