Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
বিজেপি-র উত্থানে আতঙ্কে তৃণমূল

সঙ্কটকালে দলের হাল ধরতে ডাক বহিস্কৃত চার নেতাকে

সঙ্কটে পড়েই কি বহিস্কৃত নেতাদের এখন দলে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল? পঞ্চায়েত ভোটের পরে দল বিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের রঘুনাথপুর ১ ব্লকের চার নেতাকে বহিস্কার করেছিল দল। সেই চারজনকে রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি ফিরিয়ে আনতে চেয়ে নিজের দলীয় প্যাডে চিঠি দেওয়ার পরে এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে এলাকায়। বিধায়ক সম্প্রতি চিঠি দিয়ে তাঁদের দলের কাজে সক্রিয় ভাবে যোগ দিতে বলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share: Save:

সঙ্কটে পড়েই কি বহিস্কৃত নেতাদের এখন দলে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল?

পঞ্চায়েত ভোটের পরে দল বিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের রঘুনাথপুর ১ ব্লকের চার নেতাকে বহিস্কার করেছিল দল। সেই চারজনকে রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি ফিরিয়ে আনতে চেয়ে নিজের দলীয় প্যাডে চিঠি দেওয়ার পরে এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে এলাকায়। বিধায়ক সম্প্রতি চিঠি দিয়ে তাঁদের দলের কাজে সক্রিয় ভাবে যোগ দিতে বলেছেন। ওই চারজন হলেন মিহির বাউরি, মহম্মদ সফি আনসারি, তাহির আনসারি ও অঙ্কুর বাউরি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য ছিলেন মিহিরবাবু, দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সম্পাদক ছিলেন মহম্মদ সফি আনসারি, ব্লকের তফশিলি সেলের সভাপতি ছিলেন অঙ্কুর বাউরি ও ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের নেতা ছিলেন তাহির আনসারি। লোকসভা ভোটের পরে গত জুন মাসে ওই চারজনই বিজেপিতে যোগ দেন।

আর লোকসভা ভোটেই দেখা যায়, রঘুনাথপুরে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। সে তুলনায় বিজেপি এই এলাকায় অনেকটাই ভোট বাড়িয়ে নিয়েছে। এতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘর গোছাতে নেমে পড়েন বিধায়ক। কিন্তু তলে তলে দলের কোন্দল যে অনেক দূর বিস্তৃত! এতে আতঙ্কিত হয়েই কি পূর্ণবাবু দল গোছাতে ওই চারমূর্তিকে ফের ঘরে তুলতে চাইছেন? শুরু হয়েছে এ নিয়ে জল্পনা।

তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, লোকসভা ভোটের পরেই বিধায়কের ঘনিষ্ঠ কিছু নেতা বহিস্কৃত ওই নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের দলে ফিরে আসার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। প্রথমে গররাজি থাকলেও বারবার প্রস্তাব যাওয়ায় অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মিহিরবাবুরা নিতুড়িয়ার সড়বড়িতে বিধায়কের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সাথে দেখা করেন। ওই বৈঠকের পরেই বিধায়ক চার নেতাকে চিঠি দিয়ে তাঁদের দলে সক্রিয় ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার সেই চিঠি হাতে পেয়েছেন মিহিরবাবুরা। তবে এখন এই চার নেতাই সাফ বলছেন, দলে সম্মানজনক পদ না পেলে তাঁরা তৃণমূলে ফিরবেন না। মিহির বাউরি ও মহম্মদ সফি আনসারির দাবি, “আমরা কখনই দলবিরোধী কাজ করিনি। দলের মধ্যে থেকেই আমরা প্রদীপ মাজির দল পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলাম। তাই চক্রান্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। ফলে প্রদীপবাবুর হাতে দলের দায়িত্ব থাকলে ওঁর নেতৃত্বে কাজ করা সম্ভব নয়। বিধায়ককে তা জানিয়েও দিয়েছি।” তবে প্রদীপবাবু বলছেন, “যে কেউই নিজের মতামত জানাতে পারেন। তবে ওই চারজনকে ফের দলে নেওয়ার খবর আমার জানা নেই।”.

যদিও পূর্ণবাবু.জানিয়ে দিয়েছেন, ওই চারজনের তৃণমূলের পতাকা ফের হাতে তোলা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে তিনি ব্যাখ্যা করছেন অন্য ভাবে। পূর্ণবাবু দাবি করছেন, “ওঁরা সকলেই আমাদের পুরনো নেতা। মাঝে কিছু ভূল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ওঁরা বিজেপিতে গিয়ে বুঝতে পেরেছেন এই রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত কিছু নেই। তাই ওনারা আমাদের কাছে দলে ফেরার আবেদন জানানোয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতেই তাঁদের দলের কাজে সক্রিয় অংশ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”

প্রত্যাশিত ভাবে এর বিরোধিতা করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মিহিরবাবুরা আমাদের দলে যোগ দিলেও সদস্যপদ পাননি। তাই তাঁরা তৃণমূলে ফিরে গেলে আমাদের কিছু ক্ষতি নেই। কিন্তু এই ঘটনায় পরিস্কার রঘুনাথপুরে আমাদের ক্রমবর্ধমান সংগঠনকে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে বলেই বহিস্কৃত নেতাদের ফের দলে টানার কাজ শুরু করেছে।”

জল্পনার জল অবশ্য অনেক দূর গড়িয়েছে। দলের ব্লক কমিটি এখনও গঠিত না হলেও জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর নির্দেশে আপাতত প্রদীপবাবুই ব্লকে দল পরিচালনার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তাই প্রদীপবাবুর কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত মিহিরবাবুদের ফের তৃণমূলে ফেরানোর ঘটনায় দলের মধ্যে প্রদীপবাবুর ক্ষমতা খর্ব করার প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে কি না তা নিয়েও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy