Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিক্ষুদ্ধদের ডাকে ঝালদায় আজ আস্থা ভোটের বৈঠক

বিধি মোতাবেক পুরপ্রধান আস্থা ভোট না ডাকায় সেই বৈঠক ডাকলেন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে স্বাক্ষর করা তিন কাউন্সিলর। ঝালদা পুরসভার ঘটনা। আজ সোমবার, সেই ভোট হতে চলেছে। পুরুলিয়ার মহকুমাশাসক (পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, “ওই তিন কাউন্সিলরের আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার ঝালদা পুরসভায় আস্থা ভোট হচ্ছে।” পুরসভা ও প্রশাসন সূত্রে খবর, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে গত ২৬ মে প্রশাসনের কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি দেন পুরসভার ছয় কাউন্সিলর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০১:২০
Share: Save:

বিধি মোতাবেক পুরপ্রধান আস্থা ভোট না ডাকায় সেই বৈঠক ডাকলেন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে স্বাক্ষর করা তিন কাউন্সিলর। ঝালদা পুরসভার ঘটনা। আজ সোমবার, সেই ভোট হতে চলেছে। পুরুলিয়ার মহকুমাশাসক (পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, “ওই তিন কাউন্সিলরের আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার ঝালদা পুরসভায় আস্থা ভোট হচ্ছে।”

পুরসভা ও প্রশাসন সূত্রে খবর, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে গত ২৬ মে প্রশাসনের কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি দেন পুরসভার ছয় কাউন্সিলর। এই ছ’জনের মধ্যে নির্দল, বামফ্রন্টের কাউন্সিলর সঙ্গে তৃণমূলেরও দুই কাউন্সিলর রয়েছেন। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠিতে স্বাক্ষর করা প্রাক্তন পুরপ্রধান পঙ্কজ মণ্ডল জানিয়েছেন, বিধি অনুযায়ী ওই চিঠি দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পুরপ্রধানের আস্থা প্রমাণের জন্য ভোট করতে বৈঠক ডাকার কথা। কিন্তু সেই সময় সীমার মধ্যে তিনি বৈঠক ডাকেননি। পুরপ্রধান না ডাকলে এর সাত দিনের মধ্যে সেই বৈঠক ডাকার কথা উপ পুরপ্রধানের। কিন্তু ওই পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। যদিও সম্প্রতি একজন কাউন্সিলরকে পুরপ্রধান উপ পুরপ্রধান হিসেবে কাজ করতে বলেছেন। কিন্তু তিনিও সময়মতো আস্থা প্রমাণের বৈঠক ডাকেননি। তাই তাঁরা তিন কাউন্সিলর মিলে ওই বৈঠক ডেকেছেন। পঙ্ককজবাবুর সঙ্গে যে দুই কাউন্সিলর এই বৈঠক আহ্বানে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁরা হলেন নির্দলের কালীপদ চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূলের মনোজ সাউ।

১২টি ওয়ার্ডের এই পুরসভার বর্তমান আসন চিত্র হল: বামফ্রন্ট ৫, নির্দল ২, সিপিএম সমর্থিত নির্দল ১, কংগ্রেস ১ ও তৃণমূল ৩। উল্লেখ্য তৃণমূলের তিনজন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পুরসভায় উপ পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কাউন্সিলর উত্তম চন্দ্র। তিনি দাবি করেন, “আমি তো আগেই বৈঠক ডেকেছি।” যদিও বিক্ষুদ্ধদের দাবি, তিনি সময়সীমা পার হওয়ার পরে ওই বৈঠক ডেকেছিলেন। কাজেই তা অবৈধ। মহকুমাশাসকও জানান, উপপুরপ্রধান সময়মতো ওই বৈঠক ডাকেননি। যদিও তা মানতে নারাজ। তবে ঝালদা পুরসভার এগ্জিকিউটিভ অফিসার তাপস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সোমবার ওই আস্থা ভোটাভুটি করা হচ্ছে।”

এ দিকে, পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার দু’টি বৈঠকের বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার তিনি কি পুরসভায় উপস্থিত থাকবেন? প্রদীপবাবু বলেন, “না। আমি সে দিন কলকাতায় আদালতে থাকব। আমি দু’টি বৈঠকের বৈধ্যতাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।” তাঁর দাবি, যাঁরা অনাস্থার চিঠি দেন, তাঁরা জানেন পুরসভায় উপ পুরপ্রধান নেই। তাহলে তাঁরা কেন পুরপ্রধান বৈঠক না ডাকার পরেই এই বৈঠক ডাকেননি। তিনি বলেন, সোমবার আদালতে শুনানি রয়েছে। এখন কিছু বলব না।” আপনি কেন ১৫ দিনের মধ্যে বৈঠক ডাকেননি? প্রদীপবাবু বলেন, “ঝালদার জনগণই আমাকে ওই বৈঠক ডাকতে নিষেধ করেছে। আমি জনপ্রতিনিধি। জনগণের কথা আমি মেনে চলতে বাধ্য। তাই আমি বৈঠক ডাকিনি।”

যদিও ঝালদার বাসিন্দা ব্রজশ্রী হালদারের মতে, “সেই ২০১০ সাল থেকে দেখছি বার বার এখানে পুরপ্রধানদের বিরুদ্ধে একের পর এক অনাস্থা আনা হচ্ছে। কিন্তু ঝালদার উন্নয়নে কারও নজর নেই। কথায় কথায় শুধুই অনাস্থা। আমরা এ সব দেখে দেখে বিরক্ত।” ঝালদা টাউন ক্লাবের সম্পাদক লাল সিংহ বলেন, “মাঝে মাঝেই শুনি পুরসভায় অনাস্থা আনা হয়েছে। কেন অনাস্থা, কেউ জানেন না। পুর শহরের দিকে তাকানোর কারও সময় নেই। পরিষেবা তলানিতে। কিন্তু অনাস্থায় বোধহয় এই পুরসভা রেকর্ড গড়তে চলেছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE