জেলায় বিজেপি-র উত্থান চাপে ফেলেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল নেতৃত্বকে। দুই দলের ‘লড়াই’-এর মাঝে ঘর গোছাতে শুরু করল সিপিএম। রবিবার রামপুরহাট হাইস্কুলে দলের রামপুরহাট ২ জোনাল সম্মেলনে নতুন করে সংগঠন সাজাতে শুরু করল সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, আগামী দিনে জেলা নেতৃত্বের সংগঠনে নতুন মুখ আনার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। রামপুরহাটের কুড়ি জনের তৈরি নতুন জোনাল কমিটিতে পাঁচ নতুন মুখকে আনা হয়েছে। রামপুরহাট লোকাল কমিটির সম্পাদক যাঁকে করা হয়েছে, সেই তৃপ্তি মণ্ডলও দলে নতুন প্রজন্মের নেত্রী।
পাশাপাশি পোড়খাওয়া নেতা-কর্মীদেরও তাঁদের সঙ্গে যুক্ত করে কীভাবে সংগঠন পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম বলেন, “বীরভূমের সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় বামপন্থীরা শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজ দেওয়ার, কৃষকের উত্পন্ন ফসলের ন্যায্য মূল্য দেওয়া, গ্রামের বেকার যুবক-যুবতীদের চাকুরি দেওয়া-সহ নানা বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আমরা জাঠা বের করেছিলাম। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কাছে তার কোনও গুরুত্ব নেই। তার বদলে পাড়ুইয়ে দু’টি রাজনৈতিক দলের রক্তক্ষয়ী লড়াই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে যা প্রাসঙ্গিক, তা নিয়েই বামপন্থীরা লড়ে যাবে।” তাঁদের এই রাজনৈতিক কর্মসূচিই বাকি দলগুলির তুলনায় সংগঠনের ভিত শক্ত করবে বলে রামচন্দ্রবাবুর দাবি।
এ দিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর প্রবীণ সদস্য ব্রজ মুখোপাধ্যায়, গোকুল ঘোষ, অরুণ মিত্র। এ ছাড়াও জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মণ, কালাম মোল্লা-সহ রামপুরহাট জোনাল কমিটির সদস্য সুশোভন হাজরা-সহ আরও অনেক যুব নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন। দলের হাঁসন ১ ও ২, রামপুরহাট শহর, মাড়গ্রাম এবং বুধিগ্রাম এই পাঁচটি লোকাল কমিটি নিয়ে সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলন শেষে বিকেলে পাঁচমাথা মোড়ে ভলিভল গ্রাউন্ডে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় সূত্রের খবর, দলের মধ্যে নতুনদের প্রাধান্য এবং পুরনোদের বুদ্ধিমত্তা এই দুইয়ের মিশ্রণ ঘটিয়ে দল আগামী দিনে কীভাবে চালিত হবে, তা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়। দলের অবক্ষয় বা দলীয় কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তা ঠেকাতে আরও বেশি বেশি করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সক্রিয় ভাবে যোগ দিতে দলীয় কর্মীদের এগিয়ে আসতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে এগারো পাতার খসড়া প্রতিবেদনে কেন্দ্রে বিজেপির মতো ‘সাম্প্রদায়িক’ দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া এবং রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ‘অপশাসন’ নিয়ে বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। ওই দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে আগামী দিনে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সম্মেলনে তা নিয়েও কথা হয়েছে।
এ দিকে, রামচন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “বীরভূমে সাম্প্রতিক যে রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে, তা নীতি-আদর্শহীন ক্ষমতা দখলের লড়াই। পাড়ুইয়ের সদাই সেখ আগে তো তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আজ ক্ষমতা দখলের জন্য বিজেপি তাকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছে।” তাঁর আরও দাবি, “এক দিকে অনুব্রত মণ্ডল আর অন্য দিকে দুধকুমার মণ্ডল। বোমা, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গ্রাম দখলের লড়াই চলছে। মাঝখানে প্রাণ হারাচ্ছে গরিব মানুষ। দু’দলের এই সংঘর্ষের পথ নেওয়া থেকেই স্পষ্ট, তারা আসলে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।” আগামী ২৬-২৮ ডিসেম্বর দুবরাজপুরে জেলা সম্মেলন হবে। এ দিনের সম্মেলন থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করেছে সিপিএম। সম্মেলনে রামপুরহাট ২ জোনাল সম্পাদক পদে ফের কালাম মোল্লাকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy