প্রকাশ্য সভায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিতর্কিত নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগ হয়েছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ধর্ম প্রচারক যুগল কিশোরের বিরুদ্ধেও। শুক্রবার রামপুরহাট থানায় ভীম মুর্মু নামে এক ব্যক্তি ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩ক, ২৯৫, ২৯৫ক ও ৫০৫/২ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বীরভূম বিদায়ী পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
বুধবার রামপুরহাটের গাঁধী ময়দানে সংগঠনের একটি সভায় ওই দুই নেতা বক্তৃতা রেখেছিলেন। সেখানেই তাঁরা উস্কানি দিয়ে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগকারী দাবি করেছেন। এ দিন রামপুরহাট থানার মসিনা গ্রামের ওই বাসিন্দা ভীম মুর্মুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর পরিবারের লোকেরা জানান, তিনি কাজে বাইরে গিয়েছেন। তবে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা পরেশ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, “গতকাল রামপুরহাট থেকে সভা শুনে আসার পরে ওঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। সভায় নেতাদের কথা শুনে ওঁর ভাল লাগেনি বলে আমাকে জানিয়েছিল। এর বেশি আমি কিছু জানি না।” বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্থানীয় নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও তৃণমূলের প্ররোচনাতেই ওই অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।
এ দিকে, খড়মাডাঙায় ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে জোর করে ধর্মান্তকরণের (সংগঠনের দাবি ‘ঘর ওয়াপসি’) কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন রামপুরহাটের এসডিপিও জোবি থমাস। তবে, রামপুরহাটের মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে এ রকম খবর পেয়েছি। তবে, ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে এ নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।” প্রসঙ্গত, বুধবার রামপুরহাট থানার খড়মাডাঙা গ্রামে ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া, পাখুড়িয়া থানা এবং রামপুরহাট থানার কুশুম্বা, নারায়ণপুর, আয়াষ, বনহাট এই চারটি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মাবলম্বী কিছু পরিবার হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ওই অনুষ্ঠানে পরিবারগুলির সদস্যদের প্রত্যেককে একটি ফর্মে সই বা টিপসই দিতে হয়েছিল। ফর্মের মাথায় লেখা ছিল ‘শপথ পাঠ’। তাতে লেখা ছিল, কোনও রকম প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে বা চাপে পড়ে নয়, তাঁরা প্রত্যেকে হিন্দু ধর্মে যাচ্ছেন স্বেচ্ছায়। এমনকী, লেখা রয়েছে, ধর্মান্তরণের জন্য ওই সংগঠনের কাছে তাঁরা আগাম ওভিএইচপি-র কাছে আবেদনও করেছিলেন। রাজ্যের শাসকদল বিষয়টিকে যদিও জোর করে ধর্মান্তকরণ হিসেবেই দেখছে। সংগঠন যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ দিন মাড়গ্রামে একটি দলীয় সভায় বিজেপি-র জেলা পর্যবেক্ষক রামকৃষ্ণ পাল দাবি করেন, বিজেপি সরকার কেন্দ্রে ধর্মান্তরণ বিরোধী বিল পাশ করতে চলেছে। বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কী হয়েছে, খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না। তবে, নরেন্দ্র মোদীর ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করি।”
এ দিন পাড়ুইয়ের সাত্তোরে নির্যাতিতা বধূর বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য বলেন, “এ ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে, জানি না। তবে, বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দেশজুড়ে আগুন নিয়ে খেলছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy