বাঁকুড়া আদালত। —নিজস্ব চিত্র
প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পরে আদালত চত্বরে এজেন্ট-আমানতকারীদের গালিগালাজ শুনেছিলেন তাঁর বাবা। এ বার ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আমানতকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন লগ্নি সংস্থা এমপিএসের কর্ণধার প্রমথনাথ মান্নার মেয়ে।
পুলিশের খাতায় ফেরার হয়েও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে শ্যামল সেন কমিশনে হাজিরা দিতে গিয়ে গ্রেফতার হন প্রমথনাথবাবু এবং এমপিএসের অন্যতম ডিরেক্টর প্রবীর চন্দ। সেই সময়ে বাঁকুড়া আদালতে তাঁদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল। তার পর থেকে তাঁরা জেল-হাজতে রয়েছেন। ২০১৩ সালে এমপিএসের বেশ কিছু আমানতকারী প্রমথনাথবাবু-সহ সংস্থার পাঁচ কর্তার বিরুদ্ধে বাঁকুড়া ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ২৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার একটি অভিযোগ করেন। সেই মামলায় মঙ্গলবার এই আদালতে তোলা হয় প্রমথনাথবাবুকে।
লগ্নি সংস্থার কর্তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত চত্বরে জড়ো হন জনা ৩০ এজেন্ট ও আমানতকারী। ঘটনাচক্রে, এ দিনই প্রমথনাথবাবুর সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাঁর মেয়ে কৃষ্ণা মান্না। তাঁকে ঢুকতে দেখেই ঘিরে ধরে টাকা ফেরতের দাবি জানাতে থাকেন ওই এজেন্ট-আমানতকারীরা। মধুসূদন মণ্ডল, সঞ্জয় মণ্ডল, নিমাই চৌধুরী, রাজেন্দ্রপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়েরা দাবি করেন, তাঁদের টাকা ফেরত না দিয়ে ধুমধাম করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন প্রমথনাথবাবু। ‘এমপি এস কর্তা চোর’, ‘প্রমথনাথের কড়া শাস্তি চাই’ বলে স্লোগানও দেওয়া হয়।
আচমকা এমন পরিস্থিতিতে পড়ে হতচকিত হয়ে যান কৃষ্ণাদেবী। তিনি বিক্ষোভকারীদের বলেন, “এই রকম আচরণ করে কি টাকা ফেরত পাওয়া যাবে? আমার বাবা জেল থেকে বেরোতে পারলে সব টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন।” তা শুনে অবশ্য নিরস্ত হননি ওই আমানতকারীরা। কোনও রকমে তাঁদের ঘেরাটোপ ঠেলে বেরিয়ে আদালতে ঢুকে যান কৃষ্ণাদেবী।
ভিতরে গিয়ে প্রমথনাথবাবুর পাশে বসে কিছুক্ষণ কথা বলেন কৃষ্ণাদেবী। শুনানি শেষে পুলিশ প্রমথনাথবাবুকে নিয়ে চলে যাওয়ার পরেও বিক্ষোভকারীদের এড়াতে বেশ কিছুক্ষণ আদালত কক্ষেই ছিলেন কৃষ্ণাদেবী। পুলিশ গাড়িতে তোলার সময়ে প্রমথনাথবাবু বলেন, “আমার সব সম্পত্তি সেবি-র হেফাজতে দেওয়া আছে।” আমানতকারীদের আইনজীবী জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় জানান, ২৫ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে। তত দিন অভিযুক্তকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্য প্রতারণার মামলায় আজ, বুধবার ফের প্রমথনাথবাবু ও প্রবীর চন্দকে বাঁকুড়া আদালতে তোলার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy