Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কাজের দাবিতে খনিতে বিক্ষোভ

তাঁদেরকে আর প্রয়োজন নেই। মাস খানেক আগেই তা জানিয়েছিল বেসরকারি কয়লাখনি সংস্থা। প্রতিবাদে সংস্থার বেশ কিছু কয়লাবহনকারী ডাম্পার রাস্তায় রেখে কয়েক ঘন্টা বিক্ষোভ দেখালেন একটি নিরাপত্তা সংস্থার ৩৩ জন নিরাপত্তা রক্ষী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৪০
Share: Save:

তাঁদেরকে আর প্রয়োজন নেই। মাস খানেক আগেই তা জানিয়েছিল বেসরকারি কয়লাখনি সংস্থা। প্রতিবাদে সংস্থার বেশ কিছু কয়লাবহনকারী ডাম্পার রাস্তায় রেখে কয়েক ঘন্টা বিক্ষোভ দেখালেন একটি নিরাপত্তা সংস্থার ৩৩ জন নিরাপত্তা রক্ষী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলে।

এ দিন ভোর পাঁচটা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত খয়রাশোল দুবরাজপুর রাস্তায় সারিবাগানের কাছে ওই বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভে শামিল নিরাপত্তা রক্ষীদের দাবি, তাঁরা গত ছ’বছর ধরে খয়রাশোলে একটি বেসরকারি কয়লা খনি সংস্থার হজরতপুর সাইডিং(যেখানে খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা মালগড়িতে লোড হয়) কাজ করছেন। তাঁরা বলেন, “কাজ থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা সংস্থার ডিরেক্টর ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু সদুত্তর না পেয়ে এই রাস্তায় এলাম।”

খয়রাশোল থানার পুলিশ এসে দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যবস্থা করে দেবে এই আশ্বাসে এ দিন আপাতত আন্দোলন তুলে নেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি সংস্থাটির খোলামুখ কয়লা খনি রয়েছে খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর-বড়জোড়ে। আগে ওই কয়লা হজরতপুর সাইডিং থেকেই মালগাড়িতে লোড হত। বর্তমানে সেটা বন্ধ।

ওই সংস্থারই আরও একটি খোলা মুখ কয়লা খনি রয়েছে খয়রাশোলের গঙ্গারামচকে। উদ্দেশ্য উত্তলিত কয়লা তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্রে পাঠানো। কিন্তু কেন্দ্রের বেআইনি কোল ব্লক বণ্টন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোপে রয়েছে খয়রাশোলের ওই দুটি খনিও।

সেই কারণেই এখনও পর্যন্ত কয়লা উত্তোলন চললেও, মার্চের ৩১ তারিখের পর কী হয় সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। দ্বিতীয়ত লুঠপাট আটকাতে ও বহন খরচ কমাতে বর্তমানে রেল নয় ডাম্পারের সাহায্যে উত্তোলিত কয়লা বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে সংস্থা। বিগত কয়েক মাস থেকে যেহেতু বন্ধ সাইডিং, সেই জন্যই ৩৩ জন নিরাপত্তা রক্ষীকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।

এ দিন বিক্ষোভে সামিল আসমত আলি, উতপল রাণা, আসরফ হোসেনরা জানান, যে নিরাপত্তা এজেন্সীর হয়ে এই কয়লা খনি সংস্থায় তাঁরা কাজ করছেন, সেই সংস্থারই আরও ৩৫ জন নিরাপত্তা রক্ষী বর্তমানে কাজ করছেন খয়রাশোলের খোলামুখ খনিতে। তাঁদেরকে যখন বাদ দেওয়া হয়নি, তাহলে তাঁদেরকে কেন বাদ দেওয়া হল, সেই প্রশ্নেই এ দিন সরব হল বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, “সংস্থার খনিতেই আমাদের কাজ দিক। কারণ সেগুলি তো চলছে। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।”

বেসরকারি কয়লাখনি সংস্থার ডিরেক্টর নিমাই মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমত যাঁরা এ দিন ডাম্পার আটকে ছিলেন সেই নিরাপত্তা রক্ষীরা আমাদের সংস্থার কর্মী নন। একটি নিরাপত্তা এজেন্সীর লোক। আমাদের চুক্তি সেই এজেন্সীর সঙ্গে। যেখানে সাইডিংটাই বিগত কয়কমাস ধরে বন্ধ রয়েছে। তখন আকারণে ওই নিরাপত্তা রক্ষীদের বসিয়ে বেতন দিতে হবে তার কী যুক্তি আছে।”

তিনি আরও বলেন, “তাছাড়া আমরা ওঁদের বাদও দিই নি, বলা হয়েছিল অন্য জেলায় আমাদের যে খনি রয়েছে সেখানে স্থানান্তরিত করা হোক। সবচেয়ে বড় কথা ৩১ মার্চের পর খয়রাশোলে কয়লা উত্তলনের দায়িত্ব আমাদের হাতে আদৌ থাকবে কিনা সেটাই যখন অনিশ্চিত, তখন ওই আন্দোলনের কী মানে!”

অন্য বিষয়গুলি:

khayarashol iron-ore mine work demand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE