ঐতিহ্য ভাঙল বিশ্বভারতীতে। পৌষমেলার সূচনায় বৈতালিক বেরোল, কিন্তু তাতে যোগ দিতে পারলেন না উপাচার্য। এলেন না নানা ভবনের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরাও। জনা পঞ্চাশেক ছাত্রছাত্রী নিয়ে কোনও মতে নিয়মরক্ষা করল বৈতালিকের মিছিল।
কেন এই প্রথাভঙ্গ? পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের পড়ুয়াদের জন্য বিশ্বভারতীতে আসন সংরক্ষণের দাবিতে সোমবার উপাচার্যকে ঘেরাও করে ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তনী, অভিভাবক ও অধ্যাপক-কর্মীদের একাংশ। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজের দফতরে টানা পাঁচ ঘণ্টারও বেশি আটকে থাকেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব ও তিন প্রোভোস্ট। আন্দোলনকারীদের দাবি, সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আগামী ২৪ জানুয়ারি শিক্ষা সংসদের বৈঠকের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তাদের জানান উপাচার্য। কিন্তু তা মানতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই সাত সিনিয়ার ছাত্রকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিশ্বভারতী। আসন সংরক্ষণের জন্য আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সমর্থনের জন্য ওই ছাত্রদের সাসপেন্ড করা হয়। সোমবার সকালে উপাচার্য ওই ছাত্রদের একটি চিঠিতে জানান, পৌষ উৎসবকে সামনে রেখে তিনি সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছেন। তাঁদের পরীক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও করে কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু এ সিদ্ধান্ত আন্দোলনকারীদের নরম করেনি। এ দিনও ‘কোটা’-র দাবিতে অবস্থান, বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতি পালন করেন আন্দোলনকারী কর্মী, অধ্যাপক এবং আধিকারিকদের একাংশ। বরং পৌষ মেলা উপলক্ষে প্রাক্তনীদের অনেকে আসায় বিক্ষুব্ধদের দল ভারী হয়েছে। দুপুরে একটি মিছিল কালো ব্যাজ পরে সুশান্তবাবুর ইস্তফার দাবিতে উপাসনা মন্দির থেকে উপাচার্যের বাসভবনে যায়। প্রায় হাজার তিনেক মানুষের ওই মিছিল পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফিরে অবস্থানে বসে। উপাচার্যের নির্দেশে অধ্যাপিকা শেলি ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত ৭ সদস্যের কমিটি ইন্দিরা গাঁধী কেন্দ্রে আন্দোলকারীদের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষে কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি।” গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও ওঠেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy